বৃহস্পতিবার , ১২ জানুয়ারি ২০১৭ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিলকুমারী বিলে ৮বছরে ১৪ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি

Paris
জানুয়ারি ১২, ২০১৭ ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

টিপু সুলতান, তানোর:  নামে মাত্র একটি মৎস্যজীবি সংগঠন। এই সংগঠনটি উপজেলা মৎস্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিলকুমারী বিলের মাছ শিকার করে বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিবছর সরকারি ভাবে ইজারার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বিঘায় এক হাজার টাকা। রাজস্ব হারাচ্ছে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা।

এই সংগঠনিট বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে তানোর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিলকুমারী বিলে মাছ শিকার করছে। মাছ শিকারে সরকারি কোন বিধি নির্দেশনা না মেনেই উপজেলা মৎস্য অফিসের সহযোগিতায় সরকারকে আট বছরে ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

সরকারের নিদের্শনা রয়েছে বিল ইজারার মাধ্যমে মাছ ধরতে পারবে মৎস্যজীবিরা। কিন্তু সরকারি কোন নিদের্শেনা না মেনে উপজেলা মৎস্য অফিস শুধু সমিতির সদস্যদের ১৫০ টাকা করে জনপ্রতি নিয়ে মাছ ধরার নিদের্শ দিয়েছে। সমিতির ৪৬৮ জন সদস্য মাছ ধরেছে এক হাজার ১৭৫ বিঘার জলাশয়ে।

মন্ত্রণালয় থেকে বিলের অভ্যান্তরীণ মুক্ত জলাশয় ইজারার পরিপত্র দেখে তিনি মৎস্য অফিসকে অবহিত করেন। পরে সরকারি বিধি মোতাবেক ইজারা মূল্য পরিশোধের জন্য চিঠি দেন।  সেখান থেকে এখন পর্যন্ত টাকা নেওয়ার নির্দেশনা আসেনি বলেন, তানোর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিলুফা ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, বর্তমানে একটা কমিটি করা হয়েছে। তারা মাছ ধরার আগে ইজারার টাকা জমা দিয়েছে। তবে সরকারি ভাবে কত টাকা নেওয়া হবে বলা না হওয়া আমরা টাকা নিতে পারছিনা। আর যারা আগের কমিটিতে থেকে মাছ শিকার করেছে টাকা পরিশোধ না করে তাদের টাকার জন্য বলা হবে। তাদের কাছে থেকে টাকা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, বিলেন অভ্রান্তরীণ মুক্ত জলাশয় দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ইজারা ছাড়াই মাছ নিধন করা হচ্ছে স্থানীয় মৎস্যজীবি সমিতি নামের একটি সংগঠন। তারা গত ৮ বছর জলাশয়ের শত শত মেট্রিটন মাছ হরিলুট হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উপজেলা মৎস্য অফিস নিদের্শে কথিত মৎস্য সমিতির  লোকজন বিলে জাল নামিয়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরেন। পরে উপজেলার ডাকবাংলোর মাঠে মাছের মেলা বসিয়ে বিক্রি করা হয়েছে।

এদিকে, উপজেলা মৎস্য অফিসার আরাফাত সিদ্দিকী জানান, বিলকুমারী বিলের অভ্যান্তরীন মুক্ত জলাশয় ইজারা প্রদানের পরিপত্র সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। এ কারণে বিগত বছরগুলোতে মৎস্যজীবিরা ইজারা ছাড়াই মাছ নিধন করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল বুধবার মৎস্যজীবিরা ইজারা মূল্য পরিশোধ করতে রাজি হয়েছেন। একারণে মাছ ধরার অনুমতি দেয়া হয়। তবে তারা কত টাকা জীবিরা ইজারা মূল্য পরিশোধ করবে এ বিষেয়ে তিনি কিছু বলতে পারেনি এই কর্মকতা। তিনি কত বছর ধরে আছেন এই কথার উত্তরে তিনি বলেন, আমি মেলায় আছি পরে কথা বলবো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০৮ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে মৎস্য মন্ত্রণালয়কে বিল ইজারার বিধি হস্তান্তর করে পরিপত্র প্রদান করা হয়। পরে পরিপত্রে ‘মা’ মাছ সংরক্ষণের জন্য তানোর উপজেলার বিলকুমালী বিলের বিলজোয়ানী ও ধানতৈড় মৌজার ২ একর মুক্ত জলাশয়ে অভয়াশ্রম স্থাপনের জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেখানে মাছের অভয়াশ্রম স্থাপনের পর বিলকুমারী বিলের বিলজোয়ানী ও ধানতৈড় মৌজার ১১৭৫ বিঘা অভ্যান্তরীন মুক্ত জলাশয় ইজারা প্রদানের জন্য ২০১০ সালে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়।

পরিপত্রে বলা হয়, নিবন্ধনকৃত মৎস্যজীবিকে ১ বিঘা জলাশয়ে মাছ ধরার জন্য ১ হাজার টাকা ইজারা মূল্য দিতে হবে। তবেই ওই জলাশয়ে সারা বছর মাছ ধরা যাবে। সেই মোতাবেক উপজেলা মৎস্য অফিস জলাশয় ইজারা কমিটি তৈরি করে প্রতি বছর শতকরা ১০ পারসেন্ট মূল্য বৃদ্ধি করে ইজারা আহবান করবেন।

ইজারা মূল্য পরিশোধের পর নিবন্ধনকৃত মৎস্যজীবিরা মাছ ধরতে পারবেন। এসব বিধি নিষেধ গোপন রেখে উপজেলা মৎস্য অফিস মৎস্যজীবিদের কথিত সমিতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিলের অভ্যান্তরীন মুক্ত জলাশয় ও দুটি অভয়াশ্রমের ‘মা’ মাছ নিধনের জন্য ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর মেলা বসান। এরই ধারাবাহিতায় গতকাল বুধবার ওই বিলের প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মাছ ধরে মেলা বসিয়ে বিক্রি করেছেন উপজেলা মৎস্য অফিসার ও কথিত বিলের মৎস্যজীবিরা। নিজের পকেট ভারী করতে উপজেলা মৎস্য অফিসার মৎস্যজীবিদের সহযোগিতা করে থাকেন ।

মৎস্য সমিতির সভাপতি দর্শনাথ হলদার জানান, বিলটি তাদের নিকটতম। তারা ছাড়া কেউ ওই বিলের হকদার নয়। মৎস্য অফিসারের নিদের্শে মাছ ধরনা হয়েছে। কিন্তু সরকারের ইজারা মূল্য পরিশোধ ছাড়াই মাছ ধরার ব্যাপারে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

 

স/আ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর