তানোরে নেসকো ও পল্লীবিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার চুরির হিড়িক

তানোর প্রতিনিধি : করোনাকালেও রাজশাহীর তানোরে বেড়েই চলছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। ফলে জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ কৃষক। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ মাসের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি বিএমডিএর গভীর নলকূপ এবং ব্যক্তি মালিকানা অগভীর নলকূপের তার ও ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া হাট বাজারে ও বিভিন্ন অফিসে দিনে দুপুরে মানুষের ব্যবহৃত মোবাইল সেট ছিনতাই ও খুইয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। করোনাকালে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এলাকার চিহ্নিত চুরি ছিনতায় সিন্ডিকেট।
সম্প্রতি নেচকোর বিদুৎ সংযোগ থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার আকচা ও চাঁদপুর মৌজায় অবস্থিত বিএমডিএর গভীর নলকূপের তার চুরি হয়। এতে মিটার বিকল হয়ে পড়ে। এছাড়া রহিমাডাঙ্গা মৌজায় অবস্থিত সোবহান হাজীর অগভীর নলকূপ থেকে মিটার ভেঙ্গে তার চুরি হয়ে গেছে। এসব ঘটনা নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট অপারেটরা বলছেন, এখন পুরো দমে চলছে আলুর জমিতে সেচ প্রক্রিয়া। হঠাৎ সেচ যন্ত্রের তার ও ট্রান্সফর্মা চুরি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষক। সময়মত এসব আলুর জমিতে সেচ দেয়া না হলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে চাষিরা।

সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক রোগীর দামী মোবাইল ফোন ছিনতাই করে দৌড় দেয় ছিনতাইচক্র। এছাড়া গত এক সপ্তা আগে মুন্ডুমালা বাজারে নাইটগার্ডকে পিটিয়ে দোকানের মালামাল নিয়ে যায় চোরের দল। ওই বাজারেই দিনে-দুপুরে জাহাঙ্গীর নামে এক চারকে ধরে পুলিশে দেয় জনতা।

এরআগে গত ১৪ অক্টোবর থেকে পর্যায়ক্রমে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১৫টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়। এসব ট্রান্সফর্মা বিএমডিএর গভীর নলকূপগুলোতে পল্লীবিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। কিন্তু এতো ট্রান্সফর্মা চুরি গেলেও কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি কেউ। এতে উপজেলাজুড়ে কৃষক ও গভীর নলকূপ অপরেটরদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপজেলার বাধাঁইড় মৌজার গভীর নলকূপের অপরেটর রজব আলী জানান, এবার আমন মৌসুমে বৃষ্টির পানিতেই কৃষকেরা আমন চাষাবাদ করেছেন। পানি সেচের প্রয়োজন পড়েনি। এজন্য কৃষকরা মাঠে তেমন যায়নি। এসুযোগে বুধবার দিবাগত রাতে চোরের দল তার গভীর নলকূপের ৩টি ট্রান্সফর্মা করে নেয়। একই কাইদায় উপজেলার টেটনা পাড়া মৌজা, ঝিনাখোর মৌজা, বাধাইড় মৌজা ও পাঁচন্দর মৌজা থেকে ১২টি ট্রান্সফর্মা চুরি গেছে।

এনিয়ে বিএমডিএর তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি গভীর নলকূপের অপরেটদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া চুরি ঠেকাতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরপরও গত ১৪ অক্টোবর থেকে পর্যায়ক্রমে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১৫টি ট্রান্সফর্মার ও তার চুরি হয়েছে। আমরা কৃষকের কথা বিবেচনা করে বিকল গভীর নলকূপ স্বচল করার উদ্যোগ নিয়েছি।

তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, চুরি ও ছিনতাই ঠেকাতে থানা এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। তবে, বিএমডির ট্রান্সফর্মার চুরি ঘটনা নিয়ে অনুন্ধান চলছে।

স/রি