বুধবার , ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

তানোরে দুই যুবকের পায়ে ‘পেরেক ঢুকিয়ে’ বর্বর নির্যাতন!

নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৬, ২০২০ ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় চোর সন্দেহে দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার দুপুরে নির্যাতিতদের গুরুতর অবস্থায় কঠোর গোপনীয়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সোমবার রাতেই থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত মামলা রেকর্ড করা হয়নি।

তাদের মধ্যে ফিরোজের পায়ে হাতুড়ি দিয়ে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেয়া হয়। আর জসিমকে লোহার রড় ও হাতুাড় দিয়ে পেটানো হয়েছে। এছাড়া তাদের একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

তানোর থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান, দুই যুবককে নির্যাতনের একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ফিরোজের পিতা ইসাহাক আলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে স্থানীয় তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন ও দেবিপুর গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিমসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ৯টার দিকে নির্যাতনের স্বীকার ওই দুই যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের আত্মীয় দেবিপুর গ্রামের জোহরার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। খাবার শেষে ওই বাড়ি থেকে বের হওয়া মাত্র রহিমসহ কয়েকজন চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা ফিরোজ ও জসিমকে আটক করে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এ সময় তাদের মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। পরে তাদের দুইজনকে বেঁধে রেখে রাতভর নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনের শিকার ফিরোজের মামা কামাল হোসেন জানান, রাতেই স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মামুনুর রশিদ গিয়ে তাদের বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় মামুন পায়ে পেরেক পুঁতার নির্দেশ দিলে রহিম হাতুড়ি দিয়ে ফিরোজের পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেয় এবং চোর হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে।

কামাল আরও বলেন, সোমবার সকাল ১১টার দিকে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি ফিরোজের মায়ের জিম্মায় দিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই বলে মুচলেকা নিয়ে দুইজনকে ছেড়ে দেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাদের গুরুতর অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে দেবিপুর বাজারে ফিরোজের সেলুন ছিল। সেলুনে চুল কাটা নিয়ে ফিরোজের সঙ্গে রহিমের দ্বন্দ্ব হয়েছিল। এ কারণে ফিরোজ সেখান থেকে সেলুন গুটিয়ে নিয়ে তার নিজ গ্রামে গিয়ে সেলুন দেয়। ওই দ্বন্দ্বে জেরধরে রহিম এই বর্বর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানার থানাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ‘দুই যুবককে হাসপাতালে ভর্তির পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয় হয়। এছাড়া জরুরি অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে ফিরোজের পা থেকে পেরেক বের করা হয়েছে। তারা ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা এখন আশঙ্কা মুক্ত।’

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর