তানোরে আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়ি নিজের নামে পেতে আকুতি

তানোর প্রতিনিধি:
স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে চলেছে। এখন পর্যন্ত বসতবাড়ির জায়গাটুকু নিজের নামে নেই আদিবাসি মুক্তিযোদ্ধার। সরকারী খাস খতিয়ান ভুক্ত ৪ শতক জমির উপরে ৫০ বছর আগে একটি মাটির কুড়ে ঘর করেছিলেন তিনি। সেটাই তার শেষ আবাসন স্থল।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির মোহম্মদপুর আদিবাসিপাড়ায় চার সন্তান নিয়ে বসবাস করেন আদিবাসি মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডী। সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত ৪ শতক বসতবাড়ির জমিটি নিজের নামে করতে দীর্ঘদিন বিভিন্ন অফিস ঘুরেছেন, তবুও লাভ হয়নি। এখন তার চার সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাই তার একটাই আকুতি মৃত্যুর আগে যেন বসতবাড়িটি তার নিজের নামে দেখে যেতে পারেন।

আদিবাসি মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডী বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর তানোর ভূমি অফিসে ধর্ণা দিয়েও বসতবাড়ির মাত্র ৪ শতক খাস জমি নিজের নামে করতে পারেননি তিনি। ফলে ৪ সন্তানের ভবিষৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মোহাম্মদপুর আদিবাসীপাড়ার সকলের মত নাইকা মার্ডিও সরকারী খাস জমির ৪ শতক জমিতে স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন।

মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডি বলেন, বেশ কয়েকবার ভূমি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি, কিন্তু তা নিজের নামে দলিল করে দেননি ভূমি কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম রে বাবু। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি প্রায় ৪৯ বছর হলো। কিন্তু নিজের বাড়ির মাত্র ৪ শতক জমি নিজের নামে করতে পারিনি রে বাবু। আমার মৃত্যুর পর সন্তানরা এই বাড়িতে থাকতে পারবে কিনা জানিনা। বেঁচে থাকতে এই বাড়িটা নিজের নামে দলিল করার জন্য চেষ্টা করে ২০ বছরেও তা পারিনি রে বাবু।

তানোর উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল ওহাব শেখ বলেন, দেশ স্বাধীন করে মুক্তিযোদ্ধারা কেন নিজের বাড়ির জায়গাটুকু তার নিজের নামে বরাদ্দ পাবেনা? বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় নেতারা মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন কোন গুরুত্ব দেননা। একারণেই নাইকা মার্ডির মত দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বসতবাড়িটুকুর জমি নিজের নামে করতে পারেন না। তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেয়। তবে বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে দেখবো।