ঢাবিতে রান্না করা খাবার বিতরণের শততম দিন পূরণ করলেন সৈকত, প্রশংসায় কাদের

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভাসমান-অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ডাকসুর (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। নিজেরা রান্না করে ক্ষুধার্তদের কাছে খাবার নিয়ে যাচ্ছেন সৈকত ও তার বন্ধুরা। গত তিন মাস ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে মানবতার অনন্য নজির গড়েন এ তরুণ।

সৈকতের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে সব মহলে। বিষয়টি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরেরও নজরে এসেছে। তিনি সৈকতকে অনুসরণ করতে ছাত্রলীগ নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

সৈকতের খাবার বিতরণের শততম দিন পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হন ছাত্রলীগের একসময়কার সভাপতি ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, তানভীর হাসান সৈকত ও তার সতীর্থরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অসহায় মানুষের প্রতি দায়িত্বশীলতার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। গত ১০০ দিন ভাসমান অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করেছেন এই তরুণরা, দিয়েছেন চিকিৎসাসেবাও।

সৈকত ও তার বন্ধুরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর প্রতি সম্মান রেখে টিএসসিতে রান্না করে খাবার বিতরণের মাধ্যমে যেভাবে সহায়তা করে আসছেন, তা সারা দেশে ছাত্রলীগকর্মীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

‘এমন উদ্যোগে সেতুমন্ত্রী নিজেও সহায়তা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ১০০ দিন শেষ হওয়ার পরও আপনারা নতুন কর্মসূচি নেবেন। আমি নিজেও আপনাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।’

কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে গত ১৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ হলে শিক্ষার্থীরা যার যার বাড়ি চলে যান। কিন্তু সৈকত ক্যাম্পাসের ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষের রুটি-রুজির কথা চিন্তা করে টিএসসিতেই থেকে যান। প্রথমে নিজ উদ্যোগে ২৪ মার্চ থেকে নিজের জমানো ১৩ হাজার টাকা দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি।

এই উদ্যোগের বিষয়টি ফেসবুকে জেনে পরে তার কয়েকজন বন্ধুও পাশে দাঁড়ান।

শুধু তাই নয়, সৈকত মহামারীর কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া অন্তত ১২ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন।

সরকার সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোয় এবং বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় টিএসসিতে রান্না করা খাবার বিতরণের শততম দিন মঙ্গলবার পূর্ণ করে এ কর্মসূচির ইতি টানেন সৈকত।

খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি সমাপ্ত করলেও অসহায় মানুষের কর্মসংস্থান ও সুরক্ষায় কাজ করতে চান তিনি।

এ বিষয়ে সৈকত বলেন, সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার কারণে টিএসসিতে নিয়মিত খাদ্যসেবা গ্রহণ করা খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কাজ করার সুযোগ ফিরে এসেছে। তাই তাদের কর্মসংস্থানমুখী করতে আমার এই কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করছি এবং পরবর্তী সময় আমি তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই।

সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে গত ডাকসু নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন।

 

সুত্রঃ যুগান্তর