ডিজিটাল আইনে নারীসহ ২০০ জনকে আটকের অভিযোগ রিজভীর

মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হিড়িক চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন।

বিএনপি মুখপাত্র বলেন, দেশে কভিড-১৯ সংক্রমণের প্রবল স্রোতে মানুষ যখন ভীত ও উদ্বিগ্ন; তারপরেও মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হিড়িক চলছে। বর্তমান নিপীড়ন মূলক এই মামলা দেশের ইতিহাসের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করছে।

তার অভিযোগ, কভিড-১৯ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করায় গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্কুলের শিক্ষার্থী, নারীসহ প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ভালুকার একজন ১০ম শ্রেণীর কিশোর শিক্ষার্থীও রয়েছে।

রিজভী বলেন, মানিকগঞ্জের বিএনপি নেতার মেয়ে মাহমুদা পলিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আজ কয়েক মাস ধরে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বদমেজাজের ঘোরে দেশ চালাতে গিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সকল কালাকানুন প্রয়োগ করছে। জনগণের প্রতি ক্রুদ্ধ সরকার যেন তাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।

রিজভী বলেন, অসহিষ্ণুতা ও নিপীড়নের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ অদ্বিতীয় স্বৈরাচার, বিদ্বেষ ও উগ্রতা দিয়ে তারা ভিন্নমতকে দমন করতে চায়। তাদের প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই সকল কালাকানুন, বিদ্বেষ ও সংকীর্ণতারই বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব একটা পরিমার্গ আছে, সেটি হলো বহুদলীয় গণতন্ত্রকে সহ্য না করা। তাদের ঐতিহ্যই হচ্ছে ছলেবলে কৌশলে ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের আলোকে কেড়ে নিয়ে নিজেদের দলীয় শাসনকে রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা।

বিএনপি মুখপাত্র বলেন, তারা এখানে ভিন্ন দল ও মতের অস্তিত্বকে তারা কোনোক্রমেই মেনে নিতে পারে না। তারা মনে করে আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্র অভিন্ন একটি সত্তা। তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই তারা মনে করে দেশের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা।

‘দেশটাকে পৈত্রিক সম্পত্তি বলে তারা মনে করে। সেজন্য তারা দম্ভে ও গর্বে আত্মস্ফীত। তাই বাকশালের বেওয়ারিশ লাশকেই কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারা’ যোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো দিনই সহিষ্ণুতার শিক্ষা গ্রহণ করেনি। মূলত দুর্নীতির বহু দৈত্যকার কেলেঙ্কারির কথা যেন মানুষ জানতে না পারে এই জন্যই মুক্তচিন্তার মানুষদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে।

এ সময় বলেন, কোটি কোটি মানুষ বেকার। সুদে টাকা নিয়ে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। আর সরকারের মুখে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। যাদের জন্ম ঢাকায় তারাও এখন গ্রামে পাড়ি দিচ্ছে।