সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
ডায়াবেটিসকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। রোগটিকে গুরুত্ব না দিলে হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, স্নায়ুর ক্ষতি এবং দৃষ্টি সমস্যার মতো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আবার ডায়াবেটিস হওয়া মানেই কিছু সারাজীবনের জন্য অসুস্থ হয়ে যাওয়া নয়। খাদ্যতালিকাগত কিছু পরিবর্তন এবং জীবনধারার সামঞ্জস্য এনে পুরোপুরি সুস্থ অবস্থায় জীবনযাপন করতে পারেন ডায়াবেটিস রোগী। সুশৃঙ্খল জীবন ব্যবস্থা, রুটিনমাফিক জীবন, কিছু খাদ্যভ্যাস, আর নিয়মিত ব্যায়াম এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ জেনে নিন।
১। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে আমাদের সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই হতে পারে ক্ষতিগ্রস্ত। কিডনির রোগ, চোখের সমস্যা, হৃদরোগ, স্ট্রোক, পায়ে গ্যাংগ্রিনসহ নানা জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবোলিজম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানজিনা হোসেন জানান তিন মাধ্যমে আমরা এই রোগকে কব্জায় রাখতে পারি। প্রথম মাধ্যম হচ্ছে ডায়েট। সুষম খাবার খেতে হবে ডায়াবেটিক রোগীকে। খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা মানে খাবার বাদ দেওয়া নয়। সঠিক খাবার সঠিক সময়ে খাওয়াটাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় মাধ্যম হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রম করা। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট বা প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। সেটা হতে পারে হাঁটা, সাঁতার বা সাইকেল চালানো। তৃতীয়ত, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসা গ্রহণ করা। চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খাওয়া, নিয়মিত চেকআপ করা ও সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি আমাদের এই রোগের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
২। পুষ্টিবিদ আমিনা শাহানাজ জানান, খাবারের সময় একবারে বেশি খাবার না খেয়ে খাবারের সময়কে ৬ ভাগে ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে। যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন তারা অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা পরপর কিছু না কিছু খাবার খেতে চেষ্টা করবেন।
৩। প্রতিটি মানুষের জন্য শর্করা অপরিহার্য। কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য প্রয়োজন এমন শর্করা, যা ভেঙে ডায়াবেটিস রোগীদের দেহে কম গ্লুকোজ তৈরি করবে এবং রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়াবে না বা শর্করার পরিমাণ বাড়াবে না। যেমন লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত ইত্যাদি। তবে মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো ডায়বেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪। রান্নায় অবশ্যই তেলের পরিমাণ কম ব্যবহার করতে হবে। তবে ওমেগাযুক্ত তেলের ব্যবহার করা যায়। যেসব খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যেমন ইলিশ মাছ, টুনা মাছ, রূপচাঁদা মাছ, বাদাম ইত্যাদি সপ্তাহে অন্তত দুইদিন হলেও খেতে হবে।
৫। প্রতিদিন রঙিন শাকসবজি ও ফল খেতে হবে। এগুলো থেকে পাওয়া যায় খনিজ, আঁশ ও ভিটামিন। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন কিছু না কিছু আঁশযুক্ত খাবার খেতে হয়।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন