নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী স্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সময় হাতেনাতে বুকিংসহকারীসহ ৮জনকে র্যাবের সহযোগিতায় আটক করেন ভ্রাম্যমান আদালত। শনিবার সন্ধ্যার সময় তাদের আটক করা হয়।
এদিকে আটককৃতদের ছাড়িয়ে নিতে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতার্মীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় রাজশাহী স্টেশনে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের চাপে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটকের পর ছাড়া পাওয়াদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন, রাজশাহী স্টেশনের বুকিং সহকারী আব্দুল হান্নান, মজিবর রহমান, বাকি হোসেন ও আরিফুল ইসলাম এবং রেলওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মানিক।
একাধিক সূত্র সিল্কসিটি নিউজকে জানায়, রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী আন্ত:নগর ট্রেনের ঈদের পরে ফিরতি ১৬ ও ১৭ সেপ্টম্বরের বেশকিছু টিকিট রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীসহ বুকিংসহকারীরা নিজেদের কবজায় রেখে দেন।
এরপর ওই টিকিট শনিবার সন্ধ্যার দিকে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার সময় হাতে-নাতে কয়েকজনকে র্যাবের সহযোগিতায় ধরে ফেলে ভ্রাম্যমান আদালত। এর মধ্যে চার জন বুকিংসহকারী একজন রেলওয়ে পুলিশের কনস্টেবল ও তিনজন শ্রমিক লীগের নেতাকর্মী ছিলেন।
এ ঘটনার পরে রাজশাহী রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে স্টেশনে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা আটককৃতদের ছাড়িয়ে নিতে র্যাবের বিরুদ্ধে শ্লোগানও দিতে থাকেন। তারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে আটককৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
এ সময় স্টেশনে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও স্টেশনে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আটককৃতদের সকলকেই ছেড়ে দেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক শমর কুমার পাল ও ফয়সাল হক।
তবে ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে রেলের কর্মচারীদের এ ঘটনার পরে রাজশাহী রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা রেল চলাচল বন্ধ রাখে এবং রেলওয়ে প্লাটফর্মের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। এতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষারত যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। টিকিট প্রত্যাশিরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরবর্তীতে ৪ ঘন্টা পর টিকিট বেচা পুনরায় শুরু হয়।
এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে এক যাত্রী বলেন, এখানে টিকিট নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ট্রেন বন্ধ ছিল। ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ করে ঘোষনার ১ মিনিটের মধ্যে ট্রেন কিভাবে ছেড়ে যায়। এই অনিয়ম কিভাবে মেনে নেওয়া যায়। এর বিচার কে করবে?
আলমগীর নামক আরেক যাত্রী বলে, ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে চোখের পলকে গাড়ি ছেড়ে দিল। এখন আমাদের টিকিটের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলছে। কিন্তু টাকা ফেরত দেয়া তো বড় কথা নয়। আমরা এই সময় গাড়ি পাব কোথায়?
টিকিটের জন্য অপেক্ষারত টিকিট প্রার্থী রাতুল বলেন, সব কর্মচারীরা একসাথে কালোবাজারি করতে গিয়ে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাদের স্বার্থের কারণে এমনেই টিকিট পাওয়া যায় না তারপর আবার একক্ষন লা্ইনে দাড়িয়ে আছি। জানিনা আদৌ টিকিট পাবো কিনা।
জানতে চাইলে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতা আক্তারুজ্জামান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘আটক হওয়ার পরে স্টেশনজুড়ে যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল-তাতে সাধারণ যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। এ কারণে তাদের কথা বিবেচনা করেই আটককৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। তবে রেলওয়ের প্রচোলিত আইনেই তাদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে রেলওয়ে কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করেছেন। এ কারণে ভ্রাম্যমান আদালত তাদের ছেড়ে দেন।
স/আর