টিকা গবেষণায় নেতৃত্বের পাশাপাশি উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভারত

টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিস্তৃত পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের তিন শহর সফর করেছেন। তিনি আহমেদাবাদের জাইডাস বায়োটেক পার্ক, হায়দ্রাবাদের ভারত বায়োটেক এবং পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া পরিদর্শন করেন।

এর মধ্যে দু’টি সাইটে ভারত দেশীয়ভাবে কোভিড টিকা উদ্ভাবন করছে এবং অন্য সাইটে বিশ্বকে বাঁচাতে কোটি কোটি টিকা তৈরি করা হবে।

ভারত মনে করে টিকা কেবল সুস্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বিশ্বের মঙ্গলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াইয়ে প্রতিবেশীসহ অন্যান্য দেশগুলিকে সহায়তা করা ভারতের কর্তব্য। ভারত কেবল টিকা গবেষণায় বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে না, সেই সঙ্গে বিশ্বের টিকা উৎপাদনের জন্যও ভারত গুরুত্বপূর্ণ ।

এদিকে বিশ্বের ১০০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ৪ ডিসেম্বর পুনে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তারা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং জেনেভা বায়োফার্মাসটিক্যালস লিমিটেড সফর করবেন।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকাস্থ ভারতের হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্রুত সিদ্ধান্তে ভারতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি

প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্রুত এবং সক্রিয় সিদ্ধান্তে দেশে মহাবিপর্যয় হওয়ার আগেই মহামারী ঠেকানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভারত সরকারি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দেশের মধ্যে প্রথম।

চীন ৭ জানুয়ারিতে উহান ভাইরাস সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করে। এর পরের দিন ৮ জানুয়ারিতেই ভারতে মিশন সভা হয়। ভারত ১৭ জানুয়ারি থেকে যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করে। ৩০ জানুয়ারি ভারতে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

ভারতের অধিকাংশ স্থানেই এপ্রিলের প্রথম দিকে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেই এপ্রিলের শুরু থেকেই প্রকাশ্যে মাস্ক পরেন।

ব্যাপক সংক্রমণ রোধে প্রাথমিক লকডাউন

লকডাউন দেয়ার জন্য ভারত অপেক্ষা করতে পারত এবং ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করার ঝুঁকি নিতে পারত। নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধির হার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ১০.৯ থেকে ১৯.৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল এবং দ্বিগুণ হওয়ার সময়টি ছিল মাত্র তিনদিন।

ভারত যখন জাতীয় লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন পর্যন্ত অন্য কোনও দেশ এত তাড়াতাড়ি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। এই এক সিদ্ধান্ত ভারতের চিত্র বদলে দিয়েছে।

মহামারীতে ভারতে সরকারি সাহায্য

মহামারীর সাথে লড়াই করার সময় দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাটাও জরুরি ছিল। এটা নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল, এই পরিস্থিতি দরিদ্রদের জন্য কষ্ট বয়ে আনবে না।তাৎক্ষণিকভাবে মোদি সরকার দুস্থদের সহায়তার পদক্ষেপ নেয় ।

১ দশমিক ৭০ লাখ কোটি রুপি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ (পিএমজিকেপি) এর মাধ্যমে সরকার নারী, দরিদ্র প্রবীণ নাগরিক ও কৃষকদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য এবং নগদ অর্থ প্রদানের ঘোষণা দেয় ।

এই প্রোগ্রামটি দ্বারা প্রাপ্ত সংখ্যাগুলি মনোমুগ্ধকর এবং বিশ্ব রেকর্ড তৈরি করার মতো! প্রায় ৪২ কোটি দরিদ্র মানুষ ৬৮,৮২০কোটি রুপি আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। প্রায় ৯ কোটি কৃষকের কাছে ১৭,৮৯১ কোটি রুপি  প্রদান করা হয়।

প্রায় ৩১০০০ কোটি রুপি ২০ কোটি জনগণ অ্যাকাউন্টধারী মহিলার কাছে তিন কিস্তিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। ২,৮১৪.৫০ কোটি রুপি প্রায় ২.৮১ কোটি বৃদ্ধা, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছে দুই কিস্তিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। ১.৮২ কোটি নির্মাণ শ্রমিকরা ৪,৯৮৭.১৮ কোটি রুপি আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। প্রায় ১৩ কোটি গ্যাস সিলিন্ডার দরিদ্র পরিবারগুলিতে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় নভেম্বর মাস থেকে মাসিক ভিত্তিতে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে খাদ্যশস্য এবং ডাল পান।