জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মহাসড়ক ফাঁকা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

হঠাৎ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশের লাইফ লাইন হিসেবে খ্যাত ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। আগের নির্ধারিত দামে তেল বিক্রির ভয়ে পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখায় জ্বালানিসংকটে পড়ে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামেনি ডিজেলচালিত যানবাহনগুলো। গণপরিবহনের অপেক্ষায় থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।

আগের নির্ধারিত দামে জ্বালানি তেল বিক্রি না করে এক দিন পর নতুন দামে তেল বিক্রি করে অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে অধিকাংশ পাম্প বন্ধ রাখেন পাম্প মালিকরা। যেগুলো খোলা ছিল সেগুলোতে নতুন দামে তারা তেল বিক্রি করেছেন জ্বালানি তেল।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের মূল্য ৩৪-৪৬ টাকা বৃদ্ধির খবরে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের সবগুলো পেট্রল পাম্প। রাত ১০টার পর থেকে কোনো কোনো পাম্পের লাইট অফ করে তেল বিক্রি বন্ধ করা হয়। আবার যেগুলোতে লাইট জ্বলছিল সেগুলোতে তেল নেই বলে যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

আজ শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল কমতে শুরু করে। চালকরা বেশি দামে তেল কিনে আগের নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করার ভয়ে ক্রমেই হ্রাস পেতে থাকে ডিজেলচালিত সব ধরনের যানবাহন। এতেই দুর্ভোগ দেখা দেয় যাত্রীদের।

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বাসিন্দা মহসিন জানান, আমি ঢাকা যাব। আগামী দিন কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে। প্রায় দুই ঘণ্টা চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো গাড়িতেই উঠতে পারছি না। এদিকে মহাসড়কে গণপরিবহন নেই, অপরদিকে যেগুলো আসছে সবগুলোতেই অতিরিক্ত যাত্রী।

ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল জানান, আমি সকালে ফেনী থেকে কোনো গণপরিবহন না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রাকে চড়ে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার আসি। পদুয়ার বাজার থেকে মাইক্রোবাসে চড়ে ক্যান্টনমেন্ট এবং তারপর চান্দিনায় এসেছি। যেভাবেই হোক ঢাকায় পৌঁছতে হবে।

কুমিল্লা থেকে ছেড়ে আসা রয়েল কোচের চালক জানান, গতকাল রাতের তেল ছিল। সেই তেলে সকালে বের হয়েছি। দুপুরে কুমিল্লার আলেখারচর পাম্প থেকে নতুন দামেই তেল কিনতে হয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা তো ভাড়া বেশি দিবে না। নতুন ভাড়া নির্ধারণ করার পূর্ব পর্যন্ত এভাবে চলতে হবে।

কুমিল্লা পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আমির হোসেন জানান, কোনো পাম্পে তেল দেয় নাই এমন ঘটনা নেই। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ যাবৎ অধিকাংশ পেট্রল পাম্পেই অকটেন সরবরাহ কম ছিল। আজ থেকে নুতন দামে বিক্রি করার অনুমতি আছে। তাই সবাই নতুন দামে বিক্রি করছে।

কুমিল্লা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কবির হোসেন জানান, তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে অধিকাংশ গাড়িই স্ট্যান্ডে পড়ে আছে। নতুন দামে তেল কিনে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করলে প্রটি ট্রিপে ১৪-১৫ শ টাকা লোকসান গুনতে হবে। নুতন ভাড়া নির্ধারণ না করা হলে ডিজেলচালিত অধিকাংশ গণপরিবহনই বন্ধ থাকবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ