শুক্রবার , ১৬ আগস্ট ২০২৪ | ৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

জেলায় জেলায় মামলা, আসামি আ.লীগের ৩ হাজার নেতাকর্মী

Paris
আগস্ট ১৬, ২০২৪ ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র হামলায় হতাহত ছাড়াও বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও অনেক মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মামলায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হচ্ছে। এর মধ্যেই বিভিন্ন মামলায় আওয়ামী লীগের তিন সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

গত ১৬ জুলাই বগুড়ায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের দুই এমপিসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৮২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার পর ছোড়া গুলিতে রিপন শীলের মৃত্যুতে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহিরকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এতে ৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও প্রায় ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গত ৩ আগস্ট নওগাঁয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৯২ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০ জনকে। লক্ষ্মীপুরে ২ শিক্ষার্থী হত্যায় উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুসহ আসামির সংখ্যা সহস্রাধিক। খাগড়াছড়িতে

সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ ৮ শতাধিক আ. লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। টেকনাফে গত ৫ আগস্ট পেট্রলপাম্প, শপিং কমপ্লেক্সসহ আবাসিক হোটেলে সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে প্রধান করে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জামালপুরে গত ১৯ জুলাই জেলা ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুকে প্রধান করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বগুড়ায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের দুই এমপিসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৮২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক রহিমা খাতুন বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় আসামি হিসেবে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বগুড়া-৫ আসনের সাবেক এমপি মজিবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক এমপি রাগেবুল আহসানের নাম রয়েছে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, একেএম আসাদুর রহমান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান ও বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুভাশীষ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলামসহ ৮২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার পর ছোড়া গুলিতে রিপন শীলের মৃত্যুতে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহিরকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নিহতের মা রুবী রানী শীল বাদী হয়ে হবিগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। হবিগঞ্জ থানার ওসি নূরুল আলম জানান, মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও প্রায় ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

থানাসূত্রে জানা গেছে, আবু জাহির ছাড়াও তার ছেলে ইফাত জামিল, ভাতিজা মহসিন মিয়া, ব্যক্তিগত সহকারী সুদীপ দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ শামসুল হক, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌর মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শঙ্খ শুভ্র রায়, আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান শামীম, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, সাবেক সভাপতি ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম আজাদ, হবিগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান, বানিয়াচঙ্গ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহিসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট নওগাঁয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট রাতে সদর মডেল থানায় করা এজাহারে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৯২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এ মামলা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০ জনকে।

এ বিষয়ে বায়েজিদ হোসেন পলাশ বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ওই দিন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চলানোর পাশাপাশি পুরো শহরে অরাজকতা ছড়াতে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। শান্তির শহর নওগাঁকে যারা অশান্ত করেছিল, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে মাহবুব কাদের ফাহিম নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থী আফনান পাটওয়ারী ও সাব্বির আহমেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম সালাহউদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়। এ দুই মামলায় ১৬৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ৯০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উল্লিখিত আসামিরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সদর মডেল থানার ওসি ইয়াছিন ফারুক মজুমদার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আফনান ও সাব্বির হত্যা মামলায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা এবং জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে প্রধান আসামি করে ৮ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আবছার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরও ৩ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. ফখরুল ইসলাম মামলা গ্রহণ করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন পেট্রলপাম্প, আলো শপিং কমপ্লেক্স, হোটেল নাফ কুইনসহ আরও বেশ কটি স্থাপনায় সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে আবদুর রহমান বদিকে প্রধান করে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এজাহারে টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে এজাহারটি দায়ের করেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ উসমান গনি বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর জেলা ছাত্রদল নেতা আব্দুল করিম কামরানের ওপর হামলার ঘটনায় জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুকে প্রধান করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। কামরানের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার জুঁই বাদী হয়ে গত বুধবার রাতে মামলাটি করেন। গত ১৯ জুলাই ছাত্রদল নেতা আব্দুল করিম কারমানের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। জামালপুর সদর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির জানান, এ মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

 

সর্বশেষ - জাতীয়