জায়গার অভাবে রাজশাহীতে স্থান পেলো না কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির যাত্রা শুরু সেই ১৯৯৫ সালে। কিন্তু স্থায়ী কোনো অবকাঠামো ছিল না। তাই প্রকল্প হাতে নিয়ে শুরু হয় অবকাঠামো নির্মাণ। প্রকল্পের আওতায় দেশের একমাত্র কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য রাজশাহীতে কিছু ভবনও নির্মিত হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রাজশাহীতে থাকল না কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের নাম সংশোধন করা হয়েছে। একাডেমি বাদ দিয়ে এই প্রকল্পের নাম হয়েছে ‘কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’। আর কারা একাডেমি হবে অন্য কোথাও।

নাম বদলে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক ড. সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘শুরুতে এটি কারা প্রশিক্ষণ একাডেমিই ছিল। কিন্তু প্রকল্প এলাকায় জায়গা কম। তাই সুরক্ষা সেবা বিভাগ মনে করেছে ওখানে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি হবে না। আবার নির্মাণও শুরু হয়েছে। তাই সংশ্লিষ্টরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেন যে, রাজশাহীতে যে নির্মাণ চলছে সেটি কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হোক। কেন্দ্র তো দরকার। এটা দেশের বিভিন্ন স্থানে হতেই পারে। কিন্তু একাডেমি করতে হবে ঢাকার দিকে। প্রধানমন্ত্রী এটি অনুমোদন দিয়েছেন। তারপর গত মঙ্গলবার কেন্দ্র নামেই একনেকে সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।’

কারারক্ষীদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ১৯৯৫ সালে রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়। এই একাডেমিকে স্থায়ী রূপ দিতে ২০১৫ সালে ৭৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প অনুমোদন হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩৭ দশমিক ১৩৩৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে চার একর জমি ছিল পদ্মা নদীর চর। এই চার একর চর ছাড়াও নদীর ভেতর থেকে একাডেমির জন্য আরও ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সে সময় কারাগারের পেছনে কিছু গাছও কাটা শুরু হয় একাডেমির জন্য।

আর তখনই ‘পরিবেশ রক্ষায়’ আন্দোলন শুরু করে কয়েকটি সংগঠন। তারা গাছ কাটার প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি নদীর ভেতরে একাডেমি নির্মাণ না করারও দাবি জানায় তারা। শেষ পর্যন্ত নদীর দখল ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর একাডেমি বাস্তবায়নে দেখা দেয় ধীর গতি। এই প্রকল্পের পরিচালক ড. সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী জানান, সংশোধিত প্রকল্পে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।

প্রকল্পের নাম বদলে যাওয়ায় রাজশাহীতে চলমান কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কার্যক্রম কী হবে তা জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের কারা উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি থাকছে না। যেভাবে সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, সে আলোকেই একটি কেন্দ্র হিসেবে রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে। কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি হতে পারে ঢাকায়।’

তবে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান। আন্দোলনের কারণেই কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হলো কি না জানতে চাইলে জামাত খান জামাত খান বলেন, ‘রাজশাহীতেই নদীর চরে ছাড়াও তো একাডেমি করা যেত।’

এএইচ/এস