জামায়াতকে তুলোধুনো করলেন বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি আলোচনায় জামায়াতের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর দেওয়া বক্তব্যে রেগে গিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পুরানা পল্টনে জামায়াতের সমাবেশে হামলা ও দলটির অনুসারী কয়েকজনের মৃত্যুর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইফুর রহমান।

তার এই বক্তব্যের পর ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

‘এই জামায়াত বাংলাদেশকে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে’ উল্লেখ করে দলটির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এ সবই জামায়াতের ফাইজলামি।’

বিএনপির নীতিনির্ধারক খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই জামায়াত বাংলাদেশকে আজকে এই জায়গায় এনেছে। এসবই জামায়াতের ফাইজলামি।এ সময় অনেকটা হট্টগোল লেগে যায়। এ সময় শামসুজ্জামান দুদুও ওই আইনজীবীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আরে বসেন আবার কী? তাদের মিটিং করতে দেয় নাই, উনার খুব অপরাধ হয়েছে!’

এরপর মোশাররফ হোসেন আবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। সাইফুর রহমানের উদ্দেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলো। এসব সাজিয়ে ধরে নিয়ে আসছে। কার সামনে কথা বলো। কী বলছো তুমি? তোমার কথার কৈফিয়ত দিতে হবে? জবাব দিতে হবে তোমার মতো লোককে?’

নাগরিক ফোরাম আয়োজিত ‘মানবাধিকার ও আইনের শাসন: প্রেক্ষিত ২৮ অক্টোবর’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সভায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের ওই লগি-বৈঠার আন্দোলনের দিন মানবাধিকারের কবর রচিত হয়েছিল। সেদিন গণতন্ত্রকেও আঘাত করেছিল। বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছিল।

তিনি বলেন, সেদিন বর্বরোচিতভাবে মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। তারা পরিবর্তন আনতে চেয়েছে, যা মানুষ পছন্দ করেনি। তাদের ওই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের কারণে ওয়ান-ইলেভেন তৈরি হয়। সেদিন দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র কাজ করেছে বলে বিএনপি সরকারের নানা জায়গায় নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয়েছে। দেশে একটা অরাজক পরিবেশ তৈরি করতেই আওয়ামী লীগ এরকম জঘন্য অপরাধ করেছিল। তাদের গণতন্ত্র ধ্বংসের কার্যক্রমের কারণে ওয়ান-ইলেভেন তৈরির পথ সুগম হয়েছিল।  মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় এসে অনেককে আটক করেছিল। রাজনীতিতে শুদ্ধাচার করার নাম দিয়ে তারা এসব অন্যায় করেছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ১/১১ সরকার নাকি আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল। দুই নেত্রীর সঙ্গে তখনকার সরকার আলোচনা করেছে। আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) তাদের বিদেশে যাওয়া ও অন্যায়ের সমর্থন করেননি। আওয়ামী লীগ তাদের শর্ত মেনে নিয়ে তাদের অন্যায় ও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সব অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়ার শর্তে তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছিল। জনগণের মতামত এখানে কাজ করেনি।

নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।

সূত্র:যুগান্তর