জামাই টেন পাস, শ্বশুর থ্রি : ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ সেজে ভয়ঙ্কর প্রতারণা

শ্বশুর নূর হোসেন তৃতীয় শ্রেণি পাস, আর জামাতা জাহিদুল ইসলাম পড়েছেন দশম শ্রেণি পর্যন্ত। এই তৃতীয় ও দশম শ্রেণির পড়া শ্বশুর-জামাই মিলে রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাপাড়া এলাকায় গড়ে তুলেছেন পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) বিশেষ অভিযানে ধরা পড়েছে তাদের এই অভিনব প্রতারণা।

‘পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক’ পরিচালনার আড়ালে অন্য চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করা প্রেসক্রিপশন প্যাডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখে আসছিলেন তারা।

আজ সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী রোগীদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার ওই পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব-৩।

অভিযান শেষে শশুর নূর হোসেনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং জামাতা জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে র‍্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‍্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, অভিযানে দেখা যায় অন্য ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে অপারেশনসহ দাঁতের সকল চিকিৎসা দিচ্ছেন নূর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া চিকিৎসক নূর হোসেন ওষুধের উচ্চারণও ঠিক মতো করতে পারছিলেন না। তখন সন্দেহবশত জানতে চাইলে মো. নূর হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, তিনি তৃতীয় শ্রেণি পাস। সম্পর্কে তিনি অপর ভুয়া চিকিৎসক জাহিদুল ইসলামের শ্বশুর। জামাতা জাহিদুল আগে পাথর কম্পানিতে চাকরি করতো, সেটা ছেড়ে শ্বশুরের সাথে ডেন্টাল ক্লিনিকটিতে ভূয়া চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন জাহিদুলও।

জিহান কবির নামক এক চিকিৎসকের প্যাডে তারা স্বাক্ষর করে চিকিৎসাপত্র দিয়ে আসছিলেন। জামাই জাহিদুল ওষুধের নাম লিখতেন, আর শ্বশুর নুর হোসেন শুধু করতো স্বাক্ষর। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। পরে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।