জাতিসংঘের দরজায় তাইওয়ানের টোকা

৫০ বছর আগে ২৫ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটের মাধ্যমে রিপাবলিক অব চায়নাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার বদলে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিপলস রিপাবলিক অব চায়না) রাখা হয়; যা ১৯৪৯ সালের গৃহযুদ্ধ শেষে বেইজিংয়ে ক্ষমতা দখল করে।

কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার জেরে রিপাবলিক অব চায়না সরকার লাখ লাখ শরণার্থী নিয়ে তাইওয়ান দ্বীপে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জাতিসংঘে ‘চীন’ আসন ধরে রেখেছিল এবং ভেটো ক্ষমতার সাথে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ছিল।

নির্বাসিত হওয়া সত্ত্বেও তাইপেতে কর্মকর্তাদের মার্কিন সমর্থন ছিল। মূলত পশ্চিমাদের আশঙ্কা ছিল যে, কমিউনিজম এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়তে পারে; সে শঙ্কায় তারা এভাবে সমর্থন দিতো।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর এটি শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে তাইওয়ান। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাইওয়ানের সাফল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে এই বছর ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে (ডাব্লিউএইএ) পর্যবেক্ষক হিসাবে ফিরে আসার জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে সমর্থন পেয়েছে। এমনকি টেবিলে আসন পেতে শক্তিশালী জি-৭ দেশগুলোর অনুমোদনও পেয়েছে।

কভিড-১৯ সম্পর্কিত সমস্যাগুলো তাইওয়ানকে ইউরোপের মতো জায়গায় নতুন মিত্র এবং দৃঢ় বন্ধনের উদীয়মান সম্পর্ক খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে। যেখানে ২০১৯ সালের আগে তাইয়ানের উপস্থিতি সীমিত ছিল।

গত সপ্তাহের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রকাশ করেছে যে, জাতিসংঘে অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য তাইওয়ানের ক্ষমতাকে সমর্থন করার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাইওয়ানের কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যদি তাইওয়ানের ওপর হামলা হয়, সেটা প্রতিহত করতে পাশে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে যে দেশগুলো তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছে, তাদের প্রতি চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেও তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে চীন।

গত সপ্তাহের শেষের দিকে বেইজিং আবারো তার রেজ্যুলেশন ২৭৫৮-এর ব্যাখ্যা পুনর্ব্যক্ত করেছে। তাদের দাবি ‘এক চীন’ এবং বেইজিংয়ের সরকার সমগ্র চীনের একমাত্র প্রতিনিধি।

কিন্তু জাতিসংঘে চীনের প্রভাবে কারণে তাইওয়ানের ২৩ মিলিয়ন মানুষের গণতান্ত্রিক মতের কোনো মূল্য থাকবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ