জবি শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে কারা আসছে!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের নেতৃত্বে কারা আসছেন? এটা নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীর মাঝেই একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় ও ত্যাগীরা, না নিষ্ক্রিয় কেউ, না হঠাৎ রাজনীতিতে আসা কারোর হাতে উঠবে শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ। এটা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।

 

জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির দেড় বছর পার হলেও এখনো কমিটি দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। অথচ কমিটি বিলুপ্তির পর থেকে এ পর্যন্ত  পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা হন্নে হয়ে সকাল, সন্ধ্যা, রাত  শীর্ষ নেতাদের প্রোটকল দিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাত্রলীগের দায়িত্ব পান। তারপর গত ৪ জানুয়ারী ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পান। তাদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব নেয়ার আট মাস পরও শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের ভাগ্য ফেরেনি।

জবি শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর এফএম শরীফুল ইসলামকে সভাপতি ও এস এম সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জবি ছাত্রলীগ কমিটি করা হয়। ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই শরীফ-সিরাজ ১৯৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ প্রথম সম্মেলনের পর শরীফ-সিরাজ কমিটির বিলুপ্তি ঘটে। এর পরে দীর্ঘ ছয় মাস পরে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর তরিকুল ইসলামকে সভাপতি ও শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তরিক-রাসেল কমিটি দেড় বছর অতিবাহিত করলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দুইবার স্থগিতাদেশের পর গত ১৮ মার্চ আবার দুপক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়। পরে ১৯ মার্চ তরিক-রাসেল কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গত ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে শাখা ছাত্রলীগের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আবার দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কারা এই শাখার নেতৃত্ব পাচ্ছে৷ কারণ বিগত কোন কমিটিতে পদে না থাকা, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিজ এলাকায় বাড়ি হওয়ায় বেশ কয়েকজন নতুন করে শীর্ষ পদ পেতে উঠে পড়ে লেগেছে।

এছাড়া ফরিদপুর, উত্তরবঙ্গ, বরিশাল, সিলেট এলাকা থেকেই শীর্ষ পদে নেতৃত্ব আসতে পারে বলে ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে। যেকারণে কারা শীর্ষ পদে আসছে সেটা নিয়েই বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, যারা বিগত দিনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল। দলের জন্য ত্যাগ শিকার করেছে। কোন ধরনের নেতিবাচক কোন অভিযোগ নেই। এমন নেতৃত্ব আসলে ছাত্রলীগের যে উদ্দেশ্য সেটা সম্পূর্ণ ভাবে সফল হবে।

কমিটিতে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটন, জামাল উদ্দিন, আব্দুল্লাহ শাহিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম ফরাজি, সৈয়দ শাকিল এবং সাবেক সহ সম্পাদক নাহিদ পারভেজ শীর্ষ পদে আসতে পারেন।

এদিকে, সাবেক সহ-সভাপতি আল আমিন শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিসাদ, তারেক আজীজ আলোচনায় আছেন।

এছাড়া সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, নুরুল আফসার, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম, সাবেক দফতর সম্পাদক শাহবাজ হোসেন বর্ষণ, সাবেক সহ সম্পাদক খালিদ হাসান কমিটিতে পদ পেতে ধরনা দিচ্ছেন।

জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের মোবাইলে কল করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ