ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকারীদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় দুই সাংবাদিকের নামে চলছে অপপ্রচার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় রাজশাহীর দুই সাংবাদিককে নিয়ে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুই সাংবাদিকের ছবি ব্যবহার করে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টুর মালিকানাধীন একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এই দুই সাংবাদিককে নিয়ে লেখা হয়েছে আপত্তিকর কথা।

ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক হলেন- কাজী শাহেদ ও রফিকুল ইসলাম। কাজী শাহেদ রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) নির্বাচিত সভাপতি। আগের কমিটিতেও তিনি এই পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। শাহেদ দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ ও সংবাদভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘নিউজ ২৪’-এর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক। আর রফিকুল ইসলাম শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকার রাজশাহী ব্যুরো প্রধান। তিনিও আরইউজের সদস্য।

এ দুই সাংবাদিক সম্প্রতি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুকে নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেন। তাদের লেখনীতে উঠে আসে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বেন্টু জামিন নিয়ে কীভাবে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

এরপর থেকেই এ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আরইউজে।

বৃহস্পতিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরইউজের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক এই উদ্বেগের কথা জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যম সমাজের নানা অসঙ্গতি ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। এতে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, রাজশাহীর একজন আওয়ামী লীগ নেতার নামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দুইজন গণমাধ্যমকর্মীর নামে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। এর আগে নিজস্ব পেজ ব্যবহার করে ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগিরা এমন অপকর্ম চালিয়েছেন।

এখন আমরা দেখছি যে, জামায়াত-বিএনপির পেজ ব্যবহার করে অপপ্রচার করা হচ্ছে। যেখানে দু’জন সাংবাদিক সম্পর্কে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে, যা কাল্পনিক। আমরা লক্ষ্য করছি যে, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টুর মালিকানাধীন ও বদরুল হাসান লিটন সম্পাদিত একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত মানববন্ধন বিষয়ক সংবাদেও দু’জন গণমাধ্যকর্মীকে নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সেখানে দুজন সংবাদকর্মীর নাম উল্লেখ করে যা বলা হয়েছে, তা নজিরবিহীন ও অপ্রত্যাশিত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংবাদ প্রকাশে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার জন্য আইনি পথ খোলা আছে। প্রতিবাদ, লিগ্যাল নোটিশ, প্রেস কাউন্সিল কিংবা মানহানির মামলা-সব প্রক্রিয়াতেই যাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কেবল দুই সাংবাদিকের সম্মানহানি করেন নি বরং সব গণমাধ্যমকর্মীকে হেয় করেছেন।

আরইউজে নেতৃবৃন্দ মনে করে, আজিজুল আলম বেন্টু ও তার সহযোগিদের এই উদ্দেশ্য সুদূরপ্রসারী। তারা এভাবে গণমাধ্যমের প্রকৃত কর্মীদের কণ্ঠরোধ করার ষড়যন্ত্র করছে। যাতে আগামীতে অন্যরা ভীত হয়ে তার অন্যায় কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সংবাদ না করেন। এমন তৎপরতা রুখতে গণমাধ্যমকর্মীদের ঐক্যবব্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। আর এই তৎপরতা বন্ধ না হলে শিগগিরই আইনি প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।