ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদা না পাওয়ায় এক দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনের এক দোকানে এই ঘটনা ঘটে। তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, ওই দোকানদারকে দোকানের ভেতর এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়েছেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ওই দোকানদারের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন দোকানের ঝাঁপ নামিয়ে দেন। এর বেশি কিছু ঘটেনি।

দোকানদার সেলিম হোসেন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, এক নারী ক্রেতা তাঁর দোকানে মুঠোফোনে রিচার্জ করতে আসেন। দোকানের দরজা খোলা থাকায় তিনি ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় দরজার শাটার নামিয়ে দিয়ে ছাত্রলীগের কিছু নেতা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে রাজি না হলে শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ খান ক্যাশবাক্স থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেন। রাশেদের সঙ্গে শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সামিউল আলম ওরফে সোহাগ এবং আইবিএ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহাও ছিলেন বলে তিনি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সামিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে হলের সামনে ওই দোকানে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় সেলিম হোসেন ধরা পড়েন। এ সময় অনেকের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং রানা নামের একজন দোকানের ঝাঁপ নামিয়ে দেন। সামিউল দাবি করেন, ‘আমি এককভাবে কিছুই করিনি। তা ছাড়া দোকানের টাকা নেওয়ার বিষয়েও আমি জানি না।’

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সভাপতি রাশেদ খান বলেন, ‘আমি দুপুরে খাওয়ার জন্য হলের নিচে আসি। আসার পর দেখি ওই দোকানের সামনে হট্টগোল চলছে। দোকানের ভেতর মেয়ে থাকা নিয়ে সিনহা ও সোহাগ মিলে দোকানিকে আটকে রেখেছেন। আমি সেখানে যাওয়ার এক মিনিটের মধ্যে সহকারী প্রক্টর এসে তাঁদের নিয়ে যান। আমি কোনো টাকা নিইনি।’

আইবিএ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা বলেন, ‘আমি চারুকলা থেকে খাওয়াদাওয়া করে আসছিলাম। এসে দেখি ওখানে দোকানদারকে নারীসহ আটকে রাখা হয়েছে। পরে প্রক্টর এসে তাঁদেরকে নিয়ে যান। টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ‘ফোনে অভিযোগ পেয়ে তাঁদের দুজনকে প্রক্টর অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দোকানদার সেলিম আমাদের বলেন, এক নারী তাঁর দোকানে রিচার্জ করতে একটু ভেতরে ঢুকেছিলেন। তখন সোহাগ নামের একজন দোকানের শাটার নামিয়ে দিয়ে মানুষ ডাকাডাকি শুরু করেন। তবে দোকানদার কিন্তু আমাদের কাছে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেননি।’

প্রক্টর আসাবুল হক আরও বলেন, ‘আপাতত তাঁকে দুই দিন দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আমরা আপত্তিকর কার্যকলাপের অভিযোগকারী ব্যক্তিদের বক্তব্যও শুনব। আর দোকানদার যদি টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন, তাহলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেব।’

জি/আর