চীনের প্রভাব ঠেকাতে ৩০ হাজার কোটি ব্যয়ের পরিকল্পনা ইউরোপের

বিশ্বজুড়ে চীনের প্রভাব বিস্তার ঠেকাতে ৩০ হাজার কোটি ইউরোর (৩৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার) বিশাল বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বলা হচ্ছে, তাদের এই পরিকল্পনা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের (বিআরআই) ‘প্রকৃত বিকল্প’ হবে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন ‘গ্লোবাল গেটওয়ে স্কিম’ নামে এই মহাপরিকল্পনা সামনে এনেছেন। খবর বিবিসির।

বিআরআই’র আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেল, সড়ক, সেতু, বন্দরসহ নানা ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে মোটা অংকে অর্থায়ন করেছে চীন। তবে অভিযোগ রয়েছে, এর মাধ্যমে চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে দেশগুলো, যা থেকে বেরিয়ে আসা অত্যন্ত কঠিন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশগুলোর প্রয়োজন ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’। এ জন্য এখন ইইউ’র সদস্য দেশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাত থেকে শত শত কোটি ইউরো জোগাড়ের চেষ্টা করছেন তারা।

jagonews24

ভন ডার লিয়েন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেখাতে চায়, একটি ভিন্ন গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন সব প্রকল্প দিতে পারে, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য টেকসই উন্নয়নে নজর দেবে।

তার কথায়, প্রকল্পগুলো হতে হবে উচ্চ মানের। উচ্চমাত্রায় স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিতকরণসহ তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্য বাস্তব ফলাফল প্রদানে সক্ষম হতে হবে।

ইইউ’র এক কর্মকর্তা বিবিসি’কে বলেছেন, তাদের এই মহাপরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য থাকবে আফ্রিকাকেন্দ্রিক।

চীনের কৌশলগত পরিকল্পনার ছায়া এরই মধ্যে আফ্রিকা, এশিয়া, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, এমনকি ইউরোপেও পৌঁছে গেছে। চীনের কসকো কোম্পানি গ্রিসের পাইরাস বন্দরের দুই-তৃতীয়াংশের মালিক, আবার ক্রোয়েশিয়ার একটি প্রধান সেতু তৈরি করেছে চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন।

jagonews24

ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট বলেন, বিনিয়োগে যখন পছন্দের কথা আসে, তখন হাতে থাকা অল্প কয়েকটি বিকল্পের মধ্যেও অনেক ছোট ছোট বিষয় থাকে, যার পরিণতি হয় অনেক বড়। হতে পারে তা আর্থিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে কিংবা সামাজিকভাবে।

অবশ্য যাদের ঠেকাতে এত বড় পরিকল্পনা নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সেই চীনই বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছে। গত মাসে এক ব্রিফিংয়ে ইইউ’তে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং মিং বলেছিলেন, বেইজিং ইইউ’র গ্লোবাল গেটওয়ে পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাবে, যদি এটি উন্মুক্ত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সহায়ক হয়।

তিনি সতর্ক করে আরও বলেছিলেন, অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে যদি ভূরাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করার চেষ্টা হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হবে এবং নিজেদেরই ক্ষতি করবে।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ