সোমবার , ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

চালের বাড়তি দাম আরও বাড়ছে

Paris
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বাজারে অনেক পণ্যের দাম আগের তুলনায় কমেছে। আবার অনেক পণ্যের দাম না কমলেও বাড়েনি। তবে কিছু পণ্যের দাম উল্টোপথে হাঁটছে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চাল। বাজারে চাল নিয়ে চালবাজি এখনো চলছে। আগে থেকেই চালের বাড়ন্ত বাজারে দাম আরও বাড়ছে। এতে বিপদে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ। খেই হারিয়ে ফেলছেন মধ্যবিত্তরাও। কদমতলী এলাকার বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে যে মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি কিনেছি, আজ (রবিবার) কিনতে গিয়ে দেখি ৭৫ টাকা। এভাবে লাগাতার দাম বাড়লে সংসার চালাব কীভাবে।’

একই এলাকার খুচরা বিক্রেতা মো. মিলন হোসেন বলেন, চালের দাম আগে থেকেই চড়া। আরও লাফিয়ে বাড়ছে। আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বিধায় খুচরায় দাম বাড়ছে। তিনি জানান, মজুমদার ও রশিদের মিনিকেট চাল দাম বেড়ে কেজি ৭৫ টাকা হয়েছে। গত সপ্তাহে যা ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তীরসহ অন্যান্য নাজিরশাইলও বেড়ে কেজি ৭৬ থেকে ৮০ টাকা এবং মাঝারি আটাশ চাল কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে গরিবের মোটা চাল দাম বাড়ার পর অনেক দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার কয়েকটি দোকান ঘুরে গতকাল স্বর্ণা (পাইজাম) চাল খুঁজে পাননি কারখানা শ্রমিক মো. আহসান উল্লাহ। তিনি বলেন, স্বর্ণা পাইজামের কেজি দাম বেড়ে ৫৮ টাকা হয়েছে। এরপরও চাল পাচ্ছি না। সামান্য আয়ের টাকায় এত দামের চাল কিনে খাওয়া কষ্টকর।

চৌধুরীপাড়ার চাল বিক্রেতা বাংলাদেশ রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মো. রেজাউল হক জানান, চালের দাম অনেক সময় ধরে বাড়তি। সরকার পতনের পর মাঝে সামান্য কমলেও কদিন বাদেই আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। বন্যার অজুহাত দেখিয়ে মিলগেট থেকেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রেজাউল বলেন, চালের দাম আজ (রবিবার) আরেক দফা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে কমদামি মাঝারি আটাশ চালের বস্তা (৫০ কেজি) ২৭০০ টাকায় কেনা গেছে। আজকে কিনতে হয়েছে ২৮০০ টাকায়। বিক্রি করতে হবে ২৮৬০ থেকে ২৮৭০ টাকা। আবার খান মিনিকেটের বস্তা এখন ৩৩০০ টাকা। কয়েকদিন আগেও যা ছিল ৩২০০ টাকা। রশিদের মিনিকেটের বস্তা আজ আড়তেই বিক্রি হচ্ছে ৩৪০০ টাকা। যা গতকাল ছিল ৩৩০০ টাকা। এলাকার খুচরা দোকানে দাম আরও বাড়তি।

রেজাউলসহ এলাকার অন্য চাল বিক্রেতারা জানান, গত দুদিনে মোটা চাল ভালো মানের স্বর্ণা (পাইজাম) বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে ২৯০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পড়ছে ৫৮ টাকা। দুদিন আগে যা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাদের দাবি, বন্যা ও ত্রাণ কর্মসূচির কারণে এ ধরনের মোটা ও কমদামি মাঝারি চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়তি রয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল মিনিকেট ৭২ থেকে ৭৫ টাকা এবং চাহিদার শীর্ষে থাকা ভালো মানের আটাশ চাল কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মধ্যবিত্তের চাল হিসেবে পরিচিত এই চাল দুই সপ্তাহ আগে ৫৬ টাকায় পাওয়া গেছে। আর মোটা চাল একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার প্রতিবেদনেও (শনিবার) উঠে এসেছে মূল্যবৃদ্ধির চিত্র। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে সরু চাল ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ, মাঝারি চাল ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ ও মোটা চাল ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। বছরের ব্যবধানে যা আরও বেড়েছে যথাক্রমে ৯ শতাংশ, ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ও ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একাধিক চাল ব্যবসায়ী জানান, বন্যার কারণে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, মূলত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই দাম বাড়তি। এখন বন্যার ইস্যু কেন্দ্র করে দাম বাড়াচ্ছে অসাধু মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের চক্র।

এদিকে মিল মালিকদের অনেকে মিলগেটে দাম না বাড়ার দাবি করলেও মিল মালিক সমিতি থেকে বলা হচ্ছে, ‘বন্যার প্রভাবে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে ঢাকার ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বেশি বাড়াচ্ছে।’

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আবু ইউসূফ বাচ্চু বলেন, বন্যায় অসংখ্য মিলে ধান ও চাল নষ্ট হয়েছে। এতে সরবরাহ কমেছে। অন্যদিকে ত্রাণ কর্মসূচির ফলে চাহিদা বাড়ায় দাম একটু চড়া।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, বন্যাকে কেন্দ্র করে কদিন আগে চিড়া-মুড়ি নিয়ে কারসাজি দেখেছি, এখন চাল নিয়ে হচ্ছে। চাল নিয়ে চালবাজি নতুন নয়। এই নৈরাজ্য বন্ধ করা উচিত। আমাদের প্রত্যাশা, অন্তর্র্বতী সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চালের বাজারের কারসাজি বন্ধের ব্যবস্থা করবে।

 

 

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য