সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: বাঙালির সবচেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য চালের দাম বেশ কিছু দিন ধরে বাড়ছে, যাকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন বিক্রেতারাও।
কোরবানি ঈদের পর থেকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ছয় থেকে আট টাকা; সরু চালে চার থেকে পাঁচ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভালো মানের সরু চাল (নাজির শাইল/মিনিকেট) বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫৬ টাকা দরে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরেও প্রায় একই তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কোনো কোনো বাজারে এর চেয়ে এক-দুই টাকা বেশি দরে চাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে ইরি ৮ ও স্বর্ণা চালের দর কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে ৩৩ থেকে ৩৪ টাকায় উঠেছে, যা খুচরায় বেড়েছে ৩৮ টাকা।
ঢাকার বাড্ডার কামরুল রাইস এজেন্সির মালিক মহিউদ্দিন শেখ বলেন, “চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে পাইকারি বাজারে বিআর ২৮ এর দাম ৩৬ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৩৩ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় পৌঁছেছে এবং মিনিকেট চালের কেজি ৪২ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় উঠেছে।”
নাজির শাইল ছাড়া সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ধানের বাজার বাড়ার অজুহাতে দাম বাড়ানো হয়েছে।”
বাবুবাজারে হাজী আফসার রাইস এজেন্সির কর্মী নাছির সর্দার বলেন, “সরকার ৩২ টাকা দরে গুটি চাল কেনা শুরু করার প্রভাব চালের বাজারে পড়েছে।
“এখন বাজারে মোটা চালের যোগান কম। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ ব্যাবসায়ী দোকানে মোটা চাল তুলছেন না।”
চলতি বছর বোরো মৌসুমে ৫ মে থেকে ৩১ অগাস্ট সরকারিভাবে ৩২ টাকা কেজি দরে চাল এবং ২৩ টাকায় ধান কেনার সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম কেজিতে এক টাকা বাড়লেও চালের দাম ছিল গতবারের সমান।
এবার বন্যার কারণে অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চলে থাকা কিছু চাতাল মাসখানেকের জন্য বন্ধ থাকায় দামের ওপর প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করেন তারা।
বাবু বাজারের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ধানের বাজার বাড়তি, অতি বৃষ্টি, আমদানি চালের ওপর ভ্যাটসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়েছে।
এ বিষয়ে কারওয়ানবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি আবু রায়হান জগলু বলেন, “আমদানি না হওয়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে না। দাম বাড়ার মূল কারণ হলো- মিল মালিকরা চাল স্টক করছেন।
“ঈদের আগে যে চাল আমরা ৪০ টাকায় কিনেছি, সেটা এখন কিনতে হচ্ছে ৪৩-৪৪ টাকায়। মিল মালিকরা স্টক করা বন্ধ করলে চালের দাম এমনিতেই কমে যাবে।”
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে চাল কিনতে আসা ব্যাংকার খালেদ শাহীন আল বান্না বলেন, “কেজিতে এক টাকা-দুই টাকা বাড়তে পারে, কিন্তু হঠাৎ করে এক লাফে ৫ টাকা ৬ টাকা বেড়ে গেলে তা অস্বাভাবিক।”
সূত্র: বিডিনিউজ