চারঘাট-বাঘায় আম পাড়া শুরু, প্রস্তুতি নেই চাষী-ব্যবসায়ীর

মিজানুর রহমান, চারঘাট :
প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় অনুযায়ী রাজশাহীর চারঘাট-বাঘায় শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে আম পাড়া। তবে এখনো আম পাড়া নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের। ফলে আম বাজারজাত করা নিয়ে চরম দুঃচিন্তায় রয়েছেন চারঘাট-বাঘার আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের। অন্য বছর আগে ভাবে প্রস্তুতি শুরু হলেও এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা বলে জানালেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।


স্থানীয়রা জানান, রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত হলেও মুলত চারঘাট-বাঘার আম নিয়ে রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত। তাই আম মৌসুমকে ঘিরে ব্যবসায়ী ও চাষিরা ছাড়াও আমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আগে ভাগেই নিতেন প্রস্তুতি। কিন্তু এ বছর তেমনটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কারন হিসেবে স্থানীয়দের ভাষ্য প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস আতঙ্কে গোটা দেশ যখন উত্তাল। ঠিক এমন সময় আম পাড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। যানবাহনসহ সব ধরনের যোগাযোগ রয়েছে বিছিন্ন। তাছাড়া জরুরী কাজ ছাড়া বাড়ীর বাইরে বের হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকায় আম কারা ক্রয় করবেন, কারা আম নিয়ে যাবেন। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে এখনো মৌসুমী আম ক্রেতারা আম কেনার প্রস্তুতিই নেয়নি।

অন্য দিকে আম বাজারজাত করতে চারঘাট উপজেলার পিরোজপুরে অন্য বছর আমের টুকরী বানাতে ব্যস্ত থাকতো এখানকার প্রায় ২শতাধিক পরিবার। কিন্তু এ বছর তাদের মাঝেও নেই কোন ধরনের প্রস্তুতি। তারা চরম সংশয়ের মধ্যে দিয়ে কিছু টুকরী বানালেও সেগুলো বিক্রি করতে পারেননি তারা। ফলে তাদের মধ্যেও রয়েছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা।

উপজেলার অনুপমপুর এলাকার আম ব্যবসায়ী তহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর আম পাড়া শুরু হওয়ার আগে থেকেই চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের ব্যস্তা তৈরী হতো। কিন্তু এ বছর প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের মধ্যে আম চালান দেয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়। ফলে আম পাড়া শুরুর তারিখ ঘোষনা হলেও প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয়নি।

রুস্তুমপুর এলাকার আম চাষি সেলিম রেজা বলেন, মৌসুম শুরু আগে থেকে বিভিন্ন ব্যবসয়ী আম বাগান ক্রয় করতে ছোটাছুটি করতেন। কিন্তু এ বছর আম বাগান কেনার কোন পার্টিও পাওয়া যাচ্ছে না। এত করে আমের লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে আম গাছেই পেকে নষ্ট হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনজুর রহমান জানান, এ বছর চারঘাটে পর্যাপ্ত আম বাগানে আম এসেছে। এতে আমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। তবে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মৌসুমী আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা এখনো বাগান কিনতে শুরু করেননি। এতে একটু ক্ষতির সম্ভাবনা তো রয়েছেই।

উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, আমে ক্ষতিকর ক্যামিকেল ব্যবহার প্রতিরোধে এবং অসময়ে আম পাড়া বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও থানা পুলিশ কঠোরভাবে নজরদারি করবে। আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের যানবাহন চলাচলে কোন ধরনের সমস্যা নেই।