চারঘাট পৌরসভা নির্বাচন : প্রচার-প্রচারণায় বাধার অভিযোগ বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাজশাহীর আসন্ন চারঘাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় হামলা, ভয়ভীতি ও বাধা প্রদানের অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর মো. জাকিরল ইসলাম বিকাল। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মহানগর বিএনপির দলীয় অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

সম্মেলনে প্রাধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহামন মিনু বলেন, প্রতিটি পৌর নির্বাচনে এই বিনা ভোটের সরকার জোর করে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে। ভোট কেন্দ্র দখল এবং অন্যের ফলাফল সরকারী দলের প্রার্থীর পক্ষে নিয়েছে। এখন আবার চারঘাট ও দূর্গাপুর পৌর নির্বাচন এবং পবা উপজেলা নির্বাচনে একই পন্থা অবলম্বন করার পাঁয়তারা করছে। সরকারী দলীয় সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী আইন অমান্য করে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করছেন। অভিযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। এই সকল অনিয়ম, ভোট ডাকাতী, হুমকী ও মিথ্যা মামলায় হয়নারী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মিনু।

এসময় বিএনপি প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচরনায় বাঁধা, কেন্দ্র দখল,নেতা কর্মীদের ভয় দেখানোসহ পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, “আমি মােহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম বিকুল চারঘাট পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র পদের প্রার্থী । বিগত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে অনুমানিক সকাল ৭টার দিকে চারঘাট বাজারে আমার পােস্টার লাগানাের সময়  আমার প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ মনােনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লােকজন লাঠি সােটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চারঘাট বাজারে অবস্থান নেয়।

এরপরে সকাল সাড়ে ১০ টার সময় আমি মায়ের কবর জিয়ারত করে প্রচার-প্রচারণার উদ্যেশ্যে নেতাকর্মীসহ চারঘাট বাজারের দিকে রওনা হলে পূর্ব থেকে অবস্থান করা আওয়ামী লীগ মনােনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লােকজন আমার প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করে । এক পর্যায়ে আমি এবং আমার নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালায় ।

তারা এসময় দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেল নিক্ষেপ করে আমাদের নিরস্ত্র নেতা কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় । এ ঘটনায় আমাদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক আইনেসহ দুটি মামলা দায়ের করা হয় । এরপর থেকেই আমার সকল নির্বাচনি কার্যক্রমে তার বাধা দিচ্ছে ।

সংবাদ সম্মেলনে বিকুল আরও অভিযোগ করেন, প্রচার কাজে নিয়োজিত মাইক ভেঙ্গ ফেলা হচ্ছে । পােস্টার লাগানাের পরে তা ছিড়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এবং প্রচার কাজে নিয়োজিত নারী কর্মীদের এলাকয় লিফলেট বিতরণের সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে । একই তার নেতাকর্মীদের এলাকা থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে ।

তিনি আরও বলেন, আমার পৌর এলাকার সকল নেতা কর্মীদের হুমকি প্রদান ভয়ভীতি প্রদর্শন , পুলিশ এবং আইন-শৃঙ্খলাবাীহনী কর্তৃক মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হুমকি দেয়া হচ্ছে । আমার সমর্থক ভােটারদের ভােট কেন্দ্রে ভােট দিতে না যাওয়ার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে । প্রকাশ্যে তারা বলে বেড়াচ্ছে ভােটের দিন তারা সকল ভােট কেন্দ্র দখল করে নিবে । আমাকে উদ্যেশ্য করে বিভিন্ন পথ সভায় হুমকি দিচ্ছে । এ কারণে আমি আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন পর করছি ।

তিনি বলেন, আমার নেতা কর্মীদের নিরাপত্তাসহ ভােটারদের নির্বিঘ্নে ভােটদেয়ার নিশ্চয়তা ও ভােটের সকল কার্যক্রম বিশেষত প্রচারণার ক্ষেত্রে কোনা রকমের বাধা সৃষ্টি না করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের প্রতি দাবি জানচ্ছি । সে সাথে প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি উল্লেখ্য উপরােক্ত প্রতিটি ঘটনা ও অভিযােগ গুলাে লিখিত ও মােখিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন অভিযােগের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বতর্মান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন।
আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা মাহবুব অর রশিদ,  মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এএইচ/এস