চমকের পর চমক দেখাচ্ছে বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির দলীয়ভাবে অংশগ্রহণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এখন অনেকটাই পরিষ্কার। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্ত নিয়ে দোদুল্যমান নেতাকর্মীরা এখন চমকের পর চমক দেখাচ্ছেন।

তাদের দাবি, নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির অপর যে ৪ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তারা সবাই তৈমুরকে সমর্থন দিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্তটা দেখে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে এখন কোনো বাধা নেই।

বিএনপির তৃনমূল কর্মী সমর্থকরা বলছেন, নাসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৬ ডিসেম্বর ১৫ বছর পর স্মরণকালের বিশাল শোডাউনটি ছিল কেন্দ্রের জন্য একটি প্রথম চমক। ওই র‌্যালিতে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপি ও অঙ্গদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।

তবে সবচেয়ে বড় চমক এখন কোন্দল আর বিভেদকে ভুলে দলের সকল মেরুর নেতারা তৈমুরের পেছনে। গত ২ যুগ ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যে কোন্দল বিভাজন খোদ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাধান করতে পারেননি, সেই কোন্দল শুধুমাত্র তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচনকে ঘিরে শেষ হয়ে গেছে।

কর্মী সমর্থকরা বলছেন, মার্কা বা প্রতীক পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা নারায়ণগঞ্জে প্রচারণায় অংশ নিতে আসবেন।

এদিকে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি ও নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম আকরাম। রোববার বন্দরের কদম রসূল (সা:) দরগাহ জিয়ারতে গেলে তৈমুর আলমের সঙ্গে সেখানে যোগ দেন এস এম আকরাম। তার সমর্থনের বিষয়টি এই নির্বাচনে তৈমুর আলম খন্দকারের জন্য সাপে বর হয়েছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

আজ রোববার বিকালে বন্দরের কদমরসূল দরগাহে দোয়া ও জিয়ারতের পর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, আমার চেহারায় ধানের শীষ ভেসে উঠে, আমার চেহারায় ৭৭ বছর বয়সী এক নেত্রীর চেহারা ভেসে উঠে, যিনি এ রাষ্ট্রের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেই নেত্রীকে আজ অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, আমার চেহারায় ভেসে উঠে একজন নির্যাতিত মানুষের চেহারা যিনি দেশের গণতন্ত্রের জন্য দলের কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বার বার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আজ আমার পাশে সবাই এসেছেন। এই নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের কারচুপি সরকার করে তাহলে এই নারায়ণগঞ্জ থেকে শুরু হবে সরকারের পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন।

তৈমুর বলেন, এটা জনগণ বনাম একনায়কতন্ত্রের আন্দোলন। একনায়কতন্ত্র থেকে মানুষ বাঁচতে চায়। নারায়ণগঞ্জের মানুষ পরিবর্তন চায়, তারা ট্যাক্সের বোঝা থেকে বাঁচতে চায় নাগরিক অধিকার চায়। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীকী আন্দোলন এই নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন।

তিনি বলেন, জনগণ আমাদের পাশে আছে। নির্বাচন কমিশন যদি দ্বিমুখী আচরণ করে তাহলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। কারণ জনমতের কাছে কেউ টিকতে পারে না। সময় মতো আপনারা আরও দেখতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জের নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য গঠিত হচ্ছে। সে নাগরিকদের কমিটি হবে। সেই কমিটিই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা করবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর