সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পদবঞ্চিতদের’ অবরোধের মধ্যে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ‘গোলাগুলি’র খবর দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারীদের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়াদের সংঘর্ষ হয় বলে হাটহাজারী থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান।
তিনি বলেন, “রাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই ফাঁকা গুলি করেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।”
ঘটনার পর ক্যাম্পাসে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার ঝাউতলা স্টেশনে অবরোধকারীদের ছোড়া পাথরে দুই রেলকর্মী আহত হওয়ার পর বন্ধ থাকা শাটল ট্রেন বৃহস্পতিবারও চালু হয়নি। এদিনও সকালে অবরোধকারীদের পক্ষে মিছিল হয়েছে ক্যাম্পাসে।
‘বিদ্রোহীদের’ সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতিও।
বৃহস্পতিবার সকালে টিপু বলেন, “কাল (বুধবার) রাতে ক্যাম্পাসে এসেছি। আমি শাহ আমানত হলে ছিলাম। বিদ্রোহীরা হলের বাইরে এসে শোরগোল করলে হল থেকে ছেলেরা বেরিয়ে আসে। পরে ওরা পালিয়ে যায়।”
আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় ‘অচল করে রেখেছে’ বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
“ক্যাম্পাসে কোনো সমস্যা নেই। আজ অবরোধ কর্মসূচিও নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে শাটল চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।”
অন্যদিকে আন্দোলনকারী পদবঞ্চিতরা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় ‘বাধ্য হয়েই’ তাদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে।
“আন্দোলনকারীদের মধ্যে পদ পাওয়া অনেকেই আছেন। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। কেন্দ্র থেকে হস্তক্ষেপ করলেই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যেত। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় থাকুক”, বলেন নতুন কমিটিতে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া আবদুল মালেক।
অবরোধ ও শাটল ট্রেন বন্ধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
অবরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, “একটা মিটিংয়ে আছি। দুপুরের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই দিন আগে গত রোববার চবি ছাত্রলীগের ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
পরদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। দুই দিন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করার পর বুধবার অবরোধের ডাক দেয় তারা।
২০১৫ সালের ২০ জুলাই টিপুকে সভাপতি ও ফজলে রাব্বি সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করে চবি ছাত্রলীগের এক বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা সাত মাসে চার দফা সংঘর্ষে জড়ানোয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
গত রোববার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলেও স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সূত্র: বিডিনিউজ