চবিতে ফের নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে ফের নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে তিন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে আট লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ঘটনার সত্যতা তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

তদন্ত কমিটিতে শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহাকে আহ্বায়ক, সহকারী প্রক্টর মো. আহসানুল কবীর, ডেপুটি রেজিস্ট্রার রশীদুল হায়দার জাবেদকে সদস্য ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফজলুল করিমকে সদস্যসচিব হিসেবে রাখা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। তবে অপরাধী যে-ই হোক না কেন, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযুক্ত কর্মচারীর নাম মানিক চন্দ্র দাস। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের অফিসার সেলে গ্রন্থাগার সহকারী গ্রেড-২ পদে কর্মরত।

জানা যায়, ২০২১ সালের ৩১ মে ও ১ জুন দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে নিম্নমান সহকারী ও অফিস সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে রাকিব ফরাজী, সোহেল খান ও মাকসুদুল সালেহীন নামের তিন প্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক ধাপে টাকা নেন মানিক। কখনো ৩০ হাজার, কখনো ৫০ হাজার টাকা করে কয়েক ধাপে মোট আট লাখ ২০ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মাকসুদুল সালেহীন।

এখন পর্যন্ত এ প্রতিবেদকের কাছে টাকা লেনদেনের কথোপকথনের কল রেকর্ড এসেছে। তার মধ্যে একটি কল রেকর্ডে টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রার্থীকে হুমকি প্রদান করেন মানিক। আরেকটি কথোপকথনে টাকা লেনদেনের বিষয়ে কিছু কথা বলেন মানিক।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মাকসুদুল সালেহীন বলেন, ‘আমিসহ আরো দুজনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কখনো ৩০ হাজার টাকা, কখনো ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে মানিক। এভাবে কয়েক ধাপে মোট আট লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু সে আমাদেরকে চাকরি দিতে পারেনি। এরপর আমরা টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। তাই আমি ইতিমধ্যে তাকে একটি উকিল নোটিশও পাঠিয়েছি। ’

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে মানিক চন্দ্র দাসের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এর আগে গতকাল সকালে সাংবাদিকদেরকে মানিক বলেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এসব করছে তারা। আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। প্রশাসনকে বিপদে ফেলতে এরা এসব কাজ করছে। তবে অপরাধী যে-ই হোক আমরা কাউকে ছাড় দেব না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ