ঘটনাস্থলে সিআইডি, ঘরে পাঁচটি গ্রেনেড

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় অভিযান চালানো জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরক উদ্ধারের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে আলামত সংগ্রহ করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট।

 

আজ রোববার পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াটের উপকমিশনার (ডিসি) প্রলয় কুমার জোয়ারদার এ তথ্য জানান।

 

প্রলয় কুমার জানান, গতকাল অভিযান চালানো ওই কক্ষে এখনো পাঁচটি গ্রেনেড রয়েছে, যার মধ্যে দুটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।

 

প্রলয় কুমার আরো জানান, সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য সরানোর কাজ শুরু করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। বিস্ফোরক দ্রব্য সরানোর পরই ঘটনাস্থলে নিহত জঙ্গি আসিফ কাদেরি ওরফে আরিফ কাদেরির লাশ বের করা হবে।

 

গতকাল শনিবার জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনার সূর্যবাড়িতে পুলিশ ১৬ ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালায়। এ সময় আত্মঘাতী গ্রেনেডে এক নারীসহ দুজন নিহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী জঙ্গির মরদেহে ময়নাতদন্ত চলছে। অপর জঙ্গির মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হবে আজ। আহত অবস্থায় এক শিশু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

 

এ ছাড়া ১৬ ঘণ্টার ওই অভিযানে দুই শিশুসহ আত্মসমর্পণ করেছে দুই নারী। এই দুই নারী, মিরপুরের রূপনগরে অভিযানে নিহত সাবেক মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নেসা শীলা ও পলাতক জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা।

 

এর আগে রাজধানীর পূর্ব আশকোনায় সূর্যবাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। বাড়ির ভেতরে জঙ্গিরা অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ প্রতি হামলার প্রস্তুতি নিয়ে আছে এটি নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে তলব করা হয় গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট। রাত গড়িয়ে সকাল পর্যন্ত জঙ্গিদের আত্নসমর্পণের আহ্বান জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  আত্মসমর্পণের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী  বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ও গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটনায় জঙ্গিরা। পরে  আত্মসমর্পণ করে দুই শিশুসহ দুই ওই দুই নারী।

 

চারজনের আত্মসমর্পণের প্রায় দুঘণ্টা পর বাড়িটির ভেতর থেকে জঙ্গিরা দুটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পুলিশের ইন্সপেক্টর সফি আহমেদ আহত হন। পুলিশ ও পাল্টা গুলি ছোড়ে। জঙ্গিদের কাবু করতে ফ্ল্যাটের ভেতরে গ্যাস স্প্রে করে সোয়াট টিম। পরে গ্রেনেডের বহনকারী বেল্ট পরে বাইরে বের হয়ে আসা নারী আত্মসমর্পণের অভিনয় করে  গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটালে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। এতে আহত হয় তার  কোলে থাকা শিশুকন্যা। এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ। পরে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটনো এক যুবক নিহত হয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পাল্টা গুলিতে। এই যুবক আজিমপুর অভিযানে নিহত তানভীর কাদরী ওরফে করিমের ছেলে আফিফ কাদরী। আর নিহত নারী পলাতক জঙ্গি সুমনের স্ত্রী বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, সাত জঙ্গির মধ্যে চারজন আত্নসমর্পণ করেছে, এক শিশু আহত আর দুজন নিহত হয়েছে। পরে গতকাল বিকেলে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

জঙ্গিবিরোধী এই অভিযানকে রিপল টুয়েন্টি ফোর নাম দেওয়া হয়েছে।

 

এরও প্রায় পাঁচ মাস আগে ওই ফ্ল্যাটটি স্বামী, স্ত্রী ও শিশু সন্তান থাকার নামে ভাড়া নেন জঙ্গি নেতা মুসা। গত ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর  একে একে কল্যাণপুর, আজিমপুর, রূপনগর সাভার, টাঙ্গাইল, আশুলিয়া নারায়ণগঞ্জ এবং সর্বশেষ আশকোনার ওই বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হন নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতারা।

সূত্র:এনটিভি