গ্রামপুলিশের চাকরিতেও ৩ লাখ টাকা ঘুস!

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় দুজন গ্রামপুলিশ নিয়োগে ঘুস গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

পোষ্য কোটা না মেনে টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে বঞ্চিতরা অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন দুজন নিয়োগ প্রার্থী। তারা হলেন— চৌহালী উপজেলার খাষ কাউলিয়া মধ্য জোতপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ও ঘোরজান ইউনিয়নের দক্ষিণ তেঘড়ি গ্রামের আব্দুল মজিদ।

অভিযোগকারীরা উভয়েই চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া গ্রামপুলিশের সন্তান। লিখিত অভিযোগে মোহাম্মদ আলী বলেন, তার বাবা হারুন অর রশিদ খাষ কাউলিয়া ইউনিয়নে গ্রামপুলিশের চাকরি করতেন। ২০২০ সালে চাকরি করা অবস্থাতেই মারা যান তিনি। বাবার মৃত্যুর পর টানা এক বছর বিনা বেতনে চাকরি করেছেন তিনি। এ অবস্থায় গ্রামপুলিশ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে আবেদন করেন মোহাম্মদ আলী। গত বুধবার তিনি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ইউএনও অফিসে মাস্টাররোলে কাজ করা আব্দুর রহিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আব্দুর রহিম আড়াই লাখ টাকা দিয়ে গ্রামপুলিশের চাকরি পেয়েছেন। আমার কাছেও টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিতে পারিনি। এ জন্যই আমার চাকরি হয়নি।

অপর একটি অভিযোগে দক্ষিণ তেঘড়ি গ্রামের আব্দুল মজিদ বলেন, ঘোড়জান ইউনিয়নে গ্রামপুলিশে চাকরিরত অবস্থায় গত বছর মারা যান তার বাবা আব্দুস সালাম। এর পর ওই পদে চেয়ারম্যান রমজান আলী তাকেই নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ জন্য তাকে দেড় লাখ টাকাও দিয়েছিলেন আব্দুল মজিদ। এ পদে তিনি ও তার স্ত্রী দুজনেই আবেদন করেন। কিন্তু বুধবার পরীক্ষা শেষে তাদের কাউকে নিয়োগ না দিয়ে নাসির উদ্দিন নামে অপর একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আব্দুল মজিদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান রমজান আলী প্রার্থী নাসির উদ্দিনের কাছে তিন লাখ টাকা ঘুস নিয়ে এ নিয়োগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে খাষ কাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুর রহমান শহিদকে একাধিকবার ফোন করলেও রিসিভ করেননি।

তবে ঘোড়জান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রমজান আলী টাকা লেনদেনের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এখানে ইউএনও স্যার যাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যোগ্য বিবেচিত করেছেন তারই চাকরি হয়েছে।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা ইয়াসমিন জানান, আবেদনকারীদের শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর রেজাল্টের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানরা কারও কাছে টাকা নিয়েছে কিনা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর