গ্যাস্ট্রোস্কাইসিসের সফল অস্ত্রোপচার ত্রিপুরায়

ভারতের ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো গ্যাস্ট্রোস্কাইসিস রোগের সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। রাজধানী আগরতলার টিএমসি হাসপাতালে এ সফল অস্ত্রোপচারটি হয়। এতে চিকিৎসক অনিরুদ্ধ বসাকের প্রশংসা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অস্ত্রোপচার হওয়া শিশুটির পরিবার।

জানা গেছে, গত ৪ ডিসেম্বর ত্রিপুরা ধর্মনগর এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব দে ও মুক্তি দেববর্মার ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। জন্মের পর তার অস্বাভাবিকতা দেখে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাজধানী আগরতলার জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু বুঝে উঠতে না পেরে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

পেশায় মোটরসাইকেল মেকানিকের কাজ করা বিপ্লব দে তখন একপ্রকার হতাশাগ্রস্ত। কি করবেন বুঝে উঠতে না পেরে যোগাযোগ করেন তার বন্ধুদের সঙ্গে। তারপর তাদের পরামর্শে মেয়েকে নিয়ে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান বিপ্লব।

চিকিৎসকরা জানান, গ্যাস্ট্রোস্কাইসিস রোগের ফলে শিশুদের পেটের আভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো জন্মের সময় থেকেই বাইরের দিকে চলে আসে। অর্থাৎ যাবতীয় নাড়িভুঁড়িসহ মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গ পুরোটাই থাকে বাইরের দিকে। এক্ষেত্রে এই শিশুটিরও ব্যতিক্রম ছিল না। এরপর দ্রুত যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৭ ডিসেম্বরই অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন চিকিৎসক অনিরুদ্ধ বসাক।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. অনিরুদ্ধ বসাক জানান, দীর্ঘ প্রায় দুই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় শিশুটির। আপাতত টিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকলেও কয়েক দিন পরে তাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান এই চিকিৎসক।

রাজ্যে এর আগে এ ধরনের জটিল অপারেশন করা হয়নি। নির্দিষ্ট এই সমস্যার জন্য মূলত এটিই ছিলো প্রথম সফল অস্ত্রোপচার। এই অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অনিরুদ্ধ বসাক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেনারেল সার্জন ডা. অভিক শিল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছিলেন বিভিন্ন চিকিৎসকসহ অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের ডাক্তাররা।

অনিরুদ্ধ বসাক জানান, এ ধরনের রোগ সাধারণত প্রতি ১০ হাজারে একটি দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের সমস্যায় মৃত্যু হয় শিশুদের। কারণ এক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের সময়ও খুবই কম থাকে বলে তিনি জানান।

এদিকে অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে শিশুটি। তার মা মুক্তি দেববর্মা ও বাবা বিপ্লব দে জানান, শিশুটি জন্মের পর ভীষণভাবেই চিন্তিত ছিলাম। আমাদের পরিবার পরিজনেরাও প্রায় হতাশ হয়ে পড়েন। তবে চিকিৎসক অনিরুদ্ধ বসাকের খোঁজ মেলায় আমরা অনেক ভাগ্যবান।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ