গৃহবধুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, গ্রেফতার ২

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ ও কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে আটক রেখে চাঁদা দাবির ঘটনায় কবিরহাট থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে কবিরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আবু বক্কর ছিদ্দিক তানভির (৩৬)। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউপি সদস্য মোস্তাফিজের ভাই এবং হাজী সোলায়মানের ছেলে। অপর আসামি ইকবাল হোসেন (২৬) একই গ্রামের তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যানের ছেলে।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৬ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ভুক্তভোগী তার পরিবারের সব সদস্যসহ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর আসামি আবু বক্করের নেতৃত্বে রাজন (৪০) আলতাফ (৩০),ইকবাল (২৬) রুহুল আমিন (৪৫) ফারুকসহ (৩৬) অন্যান্য আসামিরা ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে। ওই সময় আসামি আলতাফ আমার পরিহিত কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে এবং রাজন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। অন্যান্য আসামিরা আমার স্বামী কামালকে বেধড়ক মারধর করে দুটি মোবাইল ও নগদ ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে আরও জানা যায়, সেখানে আমার স্বামীর কাছে দুই লাখ চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে না পারায় তাকে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটক করে রাখে তারা। এ সময় আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। তারপর আমার স্বামী কামালের কাছে নগদ টাকা না থাকায় বাছুরসহ একটি গাভি নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরের দিন সকালে আমার স্বামীকে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়িঘর ও এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। যদি কাউকে কিছু জানাই তাহলে আমাকে আমার স্বামী-সন্তানসহ সবাইকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ ঘটনার আমি কিছু জানি না। আমার পরিষদে কাউকে আটক করেছে বলে আমি জানি না।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী থেকে ২ আসামিকে গ্রেফতার করে কবিরহাট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এজাহার নামীয় আসামি ৭ জন এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০-১২ জনকে।

ওসি আরও জানান, চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে গৃহবধূর স্বামীকে আটকে রেখে চাঁদা আদায় এবং দাবির বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বুধবার সকালে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: যুগান্তর