গণমানুষের নেতা শেখ হাসিনা যেন ঠিক বঙ্গবন্ধুরই প্রতিচ্ছবি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাঙালি তথা বিশ্বের অবহেলিত-বঞ্চিত-পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠির জীবনমানের উন্নয়নের স্বার্থে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনার মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে তার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন, উপ-মহাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে নিয়ে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়।

এ উপলক্ষে প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত এক বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা শুধু একজন ত্যাগী রাজনীতিক নন, রাষ্ট্র নায়কই নন, সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন আদর্শ মা-ও। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি বাঙালির এগিয়ে চলার পথপ্রদর্শক শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা উভয়েই তাদের সন্তানদেরকেও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেছেন, যারা নিঃস্বার্থভাবে বাংলাদেশের কল্যাণে কাজ করছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা কথায় নন-কাজে বিশ্বাসী। ২০০৮ সালের নির্বাচনী অঙ্গিকারের প্রায় পুরোটাই আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে। এজন্যে তার নেতৃত্বে গোটা বাঙালি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। মোমেন বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ‘জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার এই বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্ব গুণের কথা জাতিসংঘসহ সর্বত্র উচ্চারিত হচ্ছে।

শেখ হাসিনার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের আলোকপাতকালে ড. এ কে এ মোমেন উল্লেখ করেন, পিতার মতোই গণমানুষের নেতা শেখ হাসিনা যেন ঠিক বঙ্গবন্ধুরই প্রতিচ্ছবি। তাঁরই মত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে শেখ হাসিনা শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার এ অনুষ্ঠান হয় কুইন্সের ওয়ার্ল্ডফেয়ার মেরিনা পার্টি হলে সর্বস্তরের প্রবাসী বাঙালির উচ্ছ্বল উপস্থিতিতে। এ উপলক্ষে হোস্ট সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. খন্দকার মনসুরের সভাপতিত্বে এক আলোচনায় অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্লেষণমূলক মতামত উপস্থাপন করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিত্বকারিরা। এরমধ্যে ছিলেন আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি এম এ সালাম, বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটারন্স-ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, হোস্ট সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর আলম প্রমুখ। বিশেষ সম্মানীত অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপবেশন করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য হাজী শফিকুল আলম।

গান, কবিতা, নৃত্যের প্রতিটি পর্বে ধ্বনিত হয়েছে শেখ হাসিনা তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ঘটনাবলি। স্ক্রীণে প্রদর্শিত হয় জাতিরজনকের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং বাঙালির স্বাধীনতার জন্যে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ঘটনা। সেই পথ বেয়ে ‘শেখের বেটি’র বিশ্বনেতায় পরিণত হবার দৃশ্যাবলীও। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের এ অনুষ্ঠানে ভিন্নতা এসেছিল জনাচল্লিশেক বীর মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে।

এছাড়াও বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন সেন্টার ফর এনআরবির প্রেসিডেন্ট সেকিল চৌধুরী, মূলধারার রাজনীতিতে প্রবাসীদের পথিকৃত মোর্শেদ আলম, কবি ও কলামিস্ট ফকির ইলিয়াস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি  (প্রেস) নূরএলাহি মিনা, কমিউনিটি লিডার রানা ফেরদৌস চৌধুরী, নিলুফা শিরিন, হাজী জাফরউল্লাহ, এম এ জলিল, আবুল বাশার ভ’ইয়া, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, আব্দুর রহিম বাদশা, সাজ্জাদ হোসেন, এডভোকেট শাহ বখতিয়ার প্রমুখ।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সেক্রেটারী রেজাউল বারি, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল বাশার চুন্নু, বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভোটারন্স-৭১ এর সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সভাপতি খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, শওকত আকবর রীচি, আব্দুর রহমান, মকবুল হোসেন তালুকদার প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কমিউনিকেশন্স ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সমন্বয়ে সমগ্র অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন কামাল হোসেন মিঠু। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন আব্দুল জলিল।

অনুষ্ঠানের ফাঁকে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নতুন বই ‘শেখ হাসিনা: বিমুগ্ধ বিস্ময়’ এবং শেখ হাসিনার ভাষণ সমগ্র এর মোড়ক উম্মোচন করা হয়। জন্মদিনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালবাসা, শ্রদ্ধা আর তার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়নে সমগ্র জনগোষ্ঠির একিভ’ত হবার বিস্ময়কর ঘটনাবলির তথ্য সম্বলিত গ্রন্থ দুটি হচ্ছে শ্রদ্ধাঞ্জলির অনন্য এক অবলম্বন বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।

ড. মোমেন সম্পাদিত এ গ্রন্থে রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার গুণী ও বিদগ্ধজনের ৭৫টি লেখা স্থান পেয়েছে। এতে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত জীবন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও বহুমাতৃক নেতৃত্বের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। চন্দ্রাবতী একাডেমি প্রকাশিত এ বইয়ে প্রধানমন্ত্রী এক উজ্জ্বল, ত্যাগী, দূরদর্শী ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্বের প্রতিভূ হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন