খালেদাকে রোদের মাঝে বসিয়ে রাখার পরামর্শ দিলেন ডা. জাফরুল্লাহ

সরকার জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।  তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ষড়যন্ত্র বলেছেন। এই ষড়যন্ত্র কারা করেছে? এই সরকারই তো করেছে। এই ষড়যন্ত্রের মূল ভিত্তি দুর্নীতি। ৭ হাজার কোটি টাকা দিয়ে যে পদ্মা ব্রিজ হতো সেটা ৫০ হাজার কোটিতে পৌঁছেছে। এই টাকা কোথায় যাবে, এর হাজারটা প্রমাণ আছে।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এক বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোদে বসিয়ে রাখতে বললেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি মনে করেন, এতে বিএনপিকর্মীরা বুঝতে পারবেন যে তাদের নেত্রীকে আটকে রেখে মূলত আন্দোলনকেই আটকে রাখা হয়েছে। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘যদি বিএনপি সত্যি চায় হাসিনার ক্ষমতার পট পরিবর্তন হোক, তাহলে বিএনপির দায়িত্ব অনেক বেশি এখানে। তারেকের স্তুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না কোনো দিন। আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে ক্ষমতায় আসতে চান, জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চান, মাঠে বসতে হলে খোকনের মতো যারা আছেন, তারা আমার মতে জায়মাকে সঙ্গে নিয়ে নামতে পারেন। তারেককে নিয়ে নয়। আমি তারেককে কোনো দোষ দিচ্ছি না। স্ট্রাটেজি বলে একটা কথা আছে, আমরা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হবে না এবং বাংলাদেশের মাটিতে ফিরতে পারবে না, একমাত্র গণতন্ত্রের বিজয় হলেই তারেক দেশে ফিরতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির উচিত হবে খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে, প্রতিদিন ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রোদের মধ্যে বসাতে হবে। যাতে জনগণ দেখতে পায় তাদের নেত্রীকে অন্যায়ভাবে আটকে আন্দোলনকে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে যদি জায়মা আসে তাহলে তাকে নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়াবে। তখনই দেখবেন জোয়ার কীভাবে ওঠে, তখনই শেখ হাসিনা টের পাবেন তার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এসেছে। ’

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা ঘরের ভেতর যেসব কথা বলি কাজে তা প্রমাণ করি না। বিশেষ করে বিএনপির বেলায় এ কথা প্রযোজ্য। বিএনপিতে যেখানে খোকন, হাফিজ, আলালের মতো লোক আছে, এরা এতগুলো তরুণ আছে , খালেদা জিয়া কেন চুপচাপ গুলশানের মতো বাড়িতে আবদ্ধ থাকবে। জজ সাহেবরা একটা অন্যায় বিচার করেছেন, দুই কোটি টাকার জন্য সেই বিচার এখনো সমাপ্ত হয়নি। অন্তত পক্ষে জামিনটা তো অবশ্যই হওয়া উচিত। ’

ভাস্কর্য বিতর্ক প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে আলেমদের দিয়ে যে বিতর্ক আনা হয়েছে তার জন্য আওয়ামীলীগ দায়ী। এয়ারপোর্টের সামনে লালনের ভাস্কর্য ছিল সেটা নিয়ে হুমকি-ধামকি শুনে সরকার চুপচাপ বসে ছিল। এদেরকে দিয়ে আবার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখছেন, ফলে গায়ে লাগছে। গায়ে লাগতে লাগতে ফলে তারা আজকে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার একটা বক্তব্য নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমি সে সম্পর্কে বলতে চাই- আলেমরা শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, আপনাদের অযথা বিতর্কে জড়িয়ে পড়া ঠিক না। আজকে ভাস্কর্য বিতর্কে যাওয়া ইসলামের জন্য ক্ষতিকর। ভাস্কর্য বিতর্কে না জড়িয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আসেন।’

জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল ক‌বির খোকন, গণস্বাস্থ্যের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মোহাম্মদ আনোয়ার, শাহাজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ। সভাটি পরিচালনা করেন জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাত।