কড়া নিরাপত্তায় ক্যাম্পাস ছাড়লেন রাবি ভিসি, ১৪১ জনকে নিয়োগ

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি এম আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে পুলিশ প্রটোকলে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন তিনি।

পুলিশ প্রটোকলে ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার সময় ভিসি এম আবদুস সোবহান পথিমধ্যে সাংবাদিকদের বলেন, যেটুকু দায়িত্ব পেয়েছিলাম যথাযথভাবে পালন করেছি।

অ্যাডহক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি। শুধু বলেছেন, নিয়োগ হয়ে থাকলে পরে জানতে পারবেন। দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ভিসি।

তবে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ দিনে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। অস্থায়ী ভিত্তিতে বিভিন্ন পদে এই নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি। এর আগে এই নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালামকে অব্যাহতি দেন উপাচার্য।

তার স্থলে পরিষদ সেকশনের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-উর-রশিদকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দায়িত্ব দিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মামুন-উর-রশিদ স্বাক্ষরে ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন সেকশন অফিসার, ২৪ সহায়ক কর্মচারী এবং ৮৫ জন উচ্চ ও নিম্ন সহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এদিকে ভিসির শেষ কর্মদিবসে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ১২টায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ বাণিজ্য এবং নানা অনিয়ম নিয়ে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ভিসির বিদায় বেলায় টাকার বিনিময়ে ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার শুরু হলে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পরে তাদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া প্রায় আধাঘণ্টা চলতে থাকে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

একপর্যায়ে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায়। এতে ৫ জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেকশন অফিসার মাসুদ, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও ক্রীড়া বিভাগের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান চঞ্চল। বাকি দুইজনের পরিচয় জানা যায়নি।

সাবেক রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম বলেন, নিষেধাজ্ঞা থাকা অবৈধ নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। নিয়োগ হয়েছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই।

সামগ্রিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৭ মে রাবির ভিসি হিসেবে দ্বিতীয়বার চার বছরের জন্য নিয়োগ পান ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান।

স/অ