ক্রিকেট মাঠে মাথায় আঘাত লেগে মৃত্যুর ৭ ঘটনা

গতকাল শুক্রবার ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মিচেল স্টার্কের একটা আগুনের গোলা রবীন্দ্র জাদেজার মাথায় আঘাত করেছিল। এরপর ব্যাট হাতে ইনিংস শেষ করলেও, বল করতে নামেননি। ড্রেসিংরুমে গিয়ে তার মাথা ভো ভো করছিল। ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে পরের ইনিংসে নামেন যুজবেন্দ্র চাহাল। এটা নিয়ে এখনো দুই দলের মাঝে কথার লড়াই চলছে। বলা হচ্ছে, ভারত চালাকি করেছে। কথার লড়াই দূরে রেখে নজর দেওয়া যাক ক্রিকেটে মাথায় বল লাগার ঘটনাগুলোর দিকে।

১৬২৪ সালে জাস্পার ভিনাল প্রথম ক্রিকেটার, যিনি মাথায় আঘাত লেগে মারা যান। ক্রিকেটের আদি যুগ বলা যেতে পারে এই সময়টাকে। ভিনাল সেই ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় তাঁকে বল ধরা থেকে আটকাতে যান ব্যাটসম্যান। তাঁর ব্যাটের আঘাতে মৃত্যু হয় ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটারের। ঘটনাটি ঘটে ইংল্যান্ডের সাসেক্সে। আঘাত লাগার ১৩ দিন পর মৃত্যু হয় ভিনালের।

১৮৭০ সালে আবারও একই ঘটনা। নটিংহ্যামসায়ারের ক্রিকেটারের জর্জ সামার্স সেদিন খেলতে নেমেছিলেন মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। জন প্ল্যাটসের শর্ট বল এসে লাগে সামার্সের মাথায়। ৪ দিন পর ওই আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর।

১৮৮৩ সালে বল লেগে মারা যান ফ্রেডরিক র‍্যান্ডন সিনিয়র। ইংল্যান্ডের মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতেন তিনি। ১৮৮১ সালে তাঁর মাথায় বল লাগে। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। ২ বছর পর তাঁর মৃত্যু হয়। ফিল্ডিং করার সময় ব্যাটসম্যানের মারা বল মাথায় লেগে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মারা যান ইংল্যান্ডের আর্থার আর্লাম।

পাকিস্তানের ক্রিকেটার আব্দুল আজিজ মারা যান ১৯৫৯ সালে। মাথায় নয় তাঁর বুকে এসে বল লাগে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। কয়েদ-ই-আজাম ট্রফিতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করার সময় দিলদার আওয়ানের বল এসে লাগে তাঁর বুকে। ফের স্টান্স নেওয়ার জন্য দাঁড়াতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর নামের পাশে লেখা হয় ‘হার্ট বাই ডেড’।

বাংলাদেশেও মাথায় বল লেগে মৃত্যুর ঘটনা আছে। তবে মারা গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার রমন লাম্বা। ১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল। বাংলাদেশের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তিনি ছিলেন যথেষ্ট পরিচিত। ১৯৯৮ সালে এই বাংলাদেশের মাটিতেই ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ফিল্ডিং করতে গিয়ে রমন লাম্বার মাথায় বল লাগে। স্পিনার সাইফুল্লা খানের বলে প্রচণ্ড জোরে ব্যাট চালান মেহরাব হোসেন অপি। রমন লাম্বা ম্যাচের আগে হেলমেট পরতে চাননি। যার মাসূল দিতে হয় জীবন দিয়ে।

২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ড্যারিন রান্ডল মারা যান মাথায় বল লেগে। মাঠের মধ্যে আঘাত লাগার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান তিনি।পরের বছরই ঘটে ফিল হিউজের মৃত্যু। ২৫ নভেম্বর ২০১৪ সালে অ্যাবটের বল লাগে হিউজের মাথায়। ২ দিন পর হাসপাতালে এই তরুণ ক্রিকেটারের মৃত্যু হয়। আজও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে নামা হিউজের নামের পাশে লেখা থাকে অপরাজিত ৬৩।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ