মঙ্গলবার , ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

কোরআন-হাদিসের আলোকে মানুষের কান্না

Paris
নভেম্বর ৫, ২০২৪ ৮:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

পৃথিবীর সব মানুষের প্রথম ভাষা কান্না। কান্নার ভাষা সর্বজনীন। সব জায়গার ও সব ভাষার মানুষ কাঁদে। মানুষের কান্নার ভাষা পৃথিবীর সব ভাষাভাষী বোঝে।

একজন নবজাতকও দুনিয়ায় নিজের আগমন ও অস্তিত্বের জানান এই কান্নার ভাষায় দিয়ে থাকে।
এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নবজাতককে জন্মের সময় শয়তান খোঁচা দেয়, ফলে সে শয়তানের খোঁচায় চিৎকার করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৩১)

মানুষ বিভিন্ন কারণে কান্না করে। নিচে কয়েক ধরনের কান্না সম্পর্কে আলোচনা করা হলো—
এক. মুসিবতের কান্না : এটা সবাই জানেন, মানুষ মুসিবতে পড়লে ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সবাই কান্না করে থাকে।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর শিশুপুত্র ইবরাহিমের মৃত্যুর সময় কান্নারত অবস্থায় বলেছেন, ‘চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে, হৃদয় ব্যথিত হয়। তবে আমরা তাই বলি যার ওপর আমাদের সব সন্তুষ্টি। আর তোমার বিচ্ছেদে আমরা ব্যথিত।’ (বুখারি, হাদিস : ১৪০৭)

দুই. বিচ্ছেদের কান্না : আপনজন ও প্রিয়জনের বিচ্ছেদে মানুষ কান্না করে থাকে।

ইয়াকুব (আ.) আপন সন্তান ইউসুফ (আ.)-এর বিচ্ছেদে কান্না করেছেন। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তার চোখ দুটি কাঁপতে কাঁপতে সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং তার হৃদয় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছিল।’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৮৪)

তিন. তিলাওয়াতের কান্না : এমন অনেক সৌভাগ্যবান ব্যক্তি আছেন, যাঁরা কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্না করেন। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কেঁদে কেঁদে কোরআন তিলাওয়াত করো, যদি কান্না না আসে তাহলে কান্নার ভান ধরো।’(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৭)

ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেন, সাহাবায়ে কিরামের কোরআন তিলাওয়াতের সময় আচার্যজনক অবস্থা সৃষ্টি হতো, সাহাবিদের ভেতর কেউ তিলাওয়াতের সময় কান্না করতেন, কেউবা আবার বেহুঁশ হয়ে যেতেন, আবার কেউ এই বেহুঁশের মধ্যেই চিরবিদায় হয়ে যেতেন।(খুতবাতে জুলফিকার : ৪/১৭৯)

চার. গুনাহের কথা স্মরণ করে কান্না : যাপিত জীবনে কমবেশি সবাই গুনাহ করে থাকে, তবে গুনাহের কথা স্মরণ করে কান্না করা এক অনন্য গুণ। যে ব্যক্তি আপন গুনাহের কথা স্মরণ করে কান্না করে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলার কাছে দুটি ফোঁটা অত্যন্ত প্রিয়। এক. আল্লাহ তাআলার ভয়ে যে অশ্রু ফোঁটা ঝরে। দুই. আল্লাহ তাআলার রাস্তায় যে অশ্রু ফোঁটা ঝরে।’(তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৯)

পাঁচ. আল্লাহর ভয়ে কান্না : চোখের সদ্ব্যবহারের একটি অনন্য দিক হলো, আল্লাহর ভয়ে কান্না করা। তা ছাড়া আল্লাহর ভয়ে কান্না করা মুমিনের একটি বিশেষ গুণ এবং একনিষ্ঠতার বড় প্রমাণও। আল্লাহর ভয় ঈমানের অপরিহার্য উপাদান। কেননা ঈমান হলো আশা ও ভয়ের ভেতরে। নবী-রাসুলদের বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘এরা সৎ কাজে ছিল ক্ষিপ্রগতি, তারা আমাকে ডাকত আশা নিয়ে ও ভীত হয়ে, আর তারা ছিল আমার প্রতি বিনয়ী।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৯০)

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে তাঁর ভয়ে অশ্রুপাত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিনটি চোখ জাহান্নামের আগুন দেখবে না। যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারাদারি করে, যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, যে চোখ আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ জিনিস দেখে ক্ষুব্ধ হয়।’ (আল মুজামুল কাবির লিত তিবরানি, হাদিস : ১০০৩)

আল্লাহ তাআলা আমাদের তাঁর জন্য কান্না ও অশ্রুপাত করে চিরস্থায়ী জীবনের সফলতা অর্জনের তাওফিক দান করুন।

 

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

সর্বশেষ - ধর্ম