কোনো সহায়তা নয়, দেশবাসীর দোয়া চাই : সাদেক বাচ্চুর স্ত্রী

আমার স্বামী যা সঞ্চয় রেখে গেছেন তা নিয়ে আমি আমকার বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে মোটামুটি সুন্দরভাবে চলতে পারবো। ফেসবুকে প্যাথেটিক কথাবার্তা লেখা হচ্ছে তার আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। ফেসবুক মানেই বিকৃত করা। আমি কারো কাছে কিছুই চাই না। শুধু আমি আমার বাচ্চা কাচ্চা ও আমার স্বামীর জন্য দোয়া চাই। দেশবাসীর দোয়া পেলেই আমরা সুন্দরভাবে চলে যেতে পারবো।’

সোমবার  আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর স্ত্রী শাহনাজ। বললেন আমার স্বামী মারা যাওয়ার একদিন পর আপনাদের সাথে কথা বলেছিলাম। স্বামীকে হারিয়ে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। সেদিন অনেককিছুই সুস্থির ছিল না। আপনাদের সংবাদের পর ফেসবুকে খুব বাজে বাজে কথা লেখা হয়। যেসব আমার আত্মীয় স্বজনদের চোখে পড়ে, তারা আমাদের জিজ্ঞেস করে; আমরা বিব্রত হই।

আমার তিন ছেলে-মেয়ে। তিনজনই মাশাল্লাহ ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে। তিনজনই পড়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে। আমি সুন্দরভাবে বাচ্চাদের নিয়ে সংসার চালিয়ে নিতে পারবো। আমার কারো আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন নেই। আমি বলেছি, দুঃস্থ শিল্পীদের পাশে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী দাঁড়ান, কারণ আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির আর্থিক সামর্থ সেই অর্থে নেই। অনেক ভালো ভালো শিল্পীকেও সহায়তা নিতে হয়। মাশাল্লাহ আমার আর্থিক নয়, শুধু দোয়া দরকার বাকিটা আমি সামলে নিতে পারবো।

“আমরা একেবারে ‘সর্বস্বান্ত’ হয়ে গেছি ভাই, আমার ছোট ছোট ছোট বাচ্চা, সব উনি সামলে রেখেছিলেন। হুট করে এভাবে চলে যাবেন, আমরা ভাবতেও পারছি না। কী করব না করব; কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।” সম্প্রতি কালের কণ্ঠের এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছিলেন শাহনাজ। কথার ব্যখ্যা দিলেন, সর্বস্বান্ত বলতে আসলে স্বামীকে হারিয়ে আর কীথাকে মানুষের বলেন। একটা পরিবারের ছাদ তিনি। সেই ছাদ সরে গেলে তো মানুষের আর সেই অর্থে কিছুই থাকে না।

কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়, “তাঁর মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি মুষড়ে পড়েছেন স্ত্রী শাহনাজ। সাদেক বাচ্চু নিজের ভাই-বোনদের মানুষ করতে গিয়ে মাত্র ১৫ বছর ৭ মাস বয়সে চাকরি নেন। বিয়ে করেন একেবারে ৪০ বছর পেরিয়ে গেলে। স্বামীর মৃত্যুতে একেবারে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী শাহনাজ।

২০১৩ সালে সাদেক বাচ্চুকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় ইউনাইটেড হাসপাতলে খরচ হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা। যা সাদেক বাচ্চুর অবসরের প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে পরিশোধ করা হয়। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা। তার পরেও ফেরানো যায়নি সাদেক বাচ্চুকে। তিন অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলে-মেয়েকে রেখে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।

২০১৩ সালে ব্রেনস্ট্রোক করে, লাইফ সাপোর্টে চলে গিয়ে ছিলেন ৯ দিন। সে সময় রিটায়ারমেন্টের টাকা মিলিয়ে ৩০ লাখ টাকা ইউনাইটেড হাসপাতালকে বপরিশোধ করতে হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই এটা একটা বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা। তবুও আত্মবিশ্বাসী শাহনাজ সোমবার বলেন, আমার স্বামীর পেনশনের টাকা ও অন্যান্য গচ্ছিত বিষয়গুলো হিসেব করে দেখেছি, আমরা সাচ্ছন্দেই চলতে পারবো। আমার তিন বাচ্চার জন্য দোয়া করবেন তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ