বুধবার , ২৪ জুলাই ২০২৪ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

কোটা আন্দোলন নিয়ে কী বলেছেন মমতা?

Paris
জুলাই ২৪, ২০২৪ ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সহিংসতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য নিয়ে ঢাকা থেকে ভারত সরকারের কাছে আপত্তি জানানো হয়েছে। গত রোববার কলকাতার এক জনসভায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মমতা। তবে তিনি এটাও বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কথা বলতে পারি না। কারণ ওটা একটা আলাদা দেশ। যা বলার ভারত সরকার বলবে।

‌‌‘‘কিন্তু আমি এটুকু বলতে পারি যে অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজায় খটখটানি করে আমরা তাদের আশ্রয় নিশ্চয়ই দেব। তার কারণ ইউনাইটেড নেশনসের একটা রেজলিউশন আছে যে কেউ যদি রিফিউজি হয়ে যায় তাকে পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্মান জানাবে,’’ সেদিনের ভাষণে বলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান।

ওই ভাষণ শুনে বিশ্লেষকদের মনে হয়েছিল, সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে বাংলাদেশ থেকে বহু সংখ্যক উদ্বাস্তু পশ্চিমবঙ্গে চলে আসতে পারেন, এরকম ইঙ্গিত মমতা দিয়েছিলেন। এছাড়াও তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও প্ররোচনা, উত্তেজনায় না যাই। আমাদের সহমর্মিতা, আমাদের দুঃখ, সে যারই রক্ত ঝড়ুক, তাদের জন্য আছে। আমরা দুঃখী, আমরাও খবর রাখছি। ছাত্রছাত্রীদের মহান প্রাণ, তাজা প্রাণগুলো চলে যাচ্ছে।’’

সেদিনই বিকেলে মমতা বন্দোপাধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে কয়েকশ ছাত্র এবং অন্যান্যরা পশ্চিমবঙ্গ আর ভারতে ফিরে আসছেন। আমি রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে তাদের সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করা হয়।

ক্স কী বলছে বাংলাদেশ?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপন করেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাংলাদেশে ‘শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরছে’ এমন পোস্ট বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেছেন, তার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে বলতে চাই, তার সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার, ঘনিষ্ট এবং উষ্ণ। কিন্তু তার এই বক্তব্যে বিভ্রান্তির সুযোগ রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ভারত সরকারকে নোট দিয়ে জানিয়েছি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনে ওই নোট পাঠানো হয়েছে। তবে দিল্লি থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আবার মমতা ব্যানার্জী ঠিক কী বলেছিলেন, সেটা পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর সিভি আনন্দ বোসও জানতে চেয়েছেন।

ক্স তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাখ্যা
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ওই ভাষণ নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। এখন বাংলাদেশ সরকারও বলছে, তার ওই ভাষণের ফলে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়াতে পারে। অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, মমতা ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কথাই বলতে চেয়েছিলেন সেদিন।

দলের অন্যতম মুখপাত্র মনোজিত মণ্ডল বলেন, এর মধ্যে বিভ্রান্তির কোনও জায়গা নেই। একেবারেই এরকম কোনও কথা তিনি বলেননি যে যারা আসতে চাইছেন, চলে আসুন ইত্যাদি। তিনি যেটা বলেছিলেন যে, অনেকেই যারা ওখানে পড়তে গেছে, তারা হয়ত ভয় পাচ্ছে, তাদের কেউ যদি এখানে আশ্রয় নিতে চায়, সেক্ষেত্রে যে আন্তর্জাতিক চুক্তি আছে, সেই অনুযায়ী হবে। তবে তিনি এটাও বলেছিলেন, তিনি একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তাই বাংলাদেশ নিয়ে তিনি বিশেষ কিছু বলতে চান না। এটা একটা মানবিক আবেদন ছিল, বাঙালি— বাংলা ভাষার আবেগ থেকে তিনি বলেছিলেন কথাটা।

‘‘বাংলাদেশ সরকারকেও আমি বলব যে কোনও বিভ্রান্তির জায়গা নেই। মমতা একটা মানবিক আবেদন করেছেন এবং সেটাও ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে যারা সত্যিই সেখানে সাফার করছে,’’ বলেন মনোজিত মণ্ডল।

ক্স সীমান্ত পেরিয়ে কত মানুষ ঢুকেছে ভারতে?
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহ থেকে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল, তার পরে বহু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বা অন্যান্য রাজ্যগুলোতে চলে এসেছেন, বাস্তব এমন নয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বলেছে, সীমান্ত চৌকিগুলো দিয়ে ৪ হাজার ৩১৫ জন মানুষ ভারতে প্রবেশ করেছেন।

সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পূর্ব কমাণ্ডের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত চার দিনে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করেছেন যারা, তাদের বেশিরভাগই ভারতীয়, ৪১ জন বাংলাদেশের নাগরিক, এক হাজারের কিছু বেশি নেপালি। এছাড়াও ভূটান, মালদ্বীপ এবং একজন কানাডার নাগরিকও বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন।

তারা মূলত ভারত এবং অন্যান্য দেশের ছাত্রছাত্রী, যারা বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। তাদের সুবিধার জন্য সীমান্ত চৌকিগুলো বাড়তি সময় খোলা রাখা হচ্ছে এবং একটি সহায়তা ডেস্কও চালু রাখা হয়েছে বলে বিএসএফ জানিয়েছে। এর বাইরে বহু মানুষ উদ্বাস্তুদের মতো ভারতে চলে এসেছেন, এরকম ঘটনা হয়নি বলেই দাবি বিএসএফ কর্মকর্তাদের। তবে বাংলাদেশের ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে ভারত নজরদারি বাড়িয়েছে সীমান্তে।

পূর্ব কমান্ডের প্রধান, অতিরিক্ত মহা-নির্দেশক রবি গান্ধী ‘অপারেশন অ্যালার্ট’ চালু করেছেন, যাতে সীমান্তের ওপারের ঘটনাক্রমের দিকে বিএসএফ নজর রাখতে পারে এবং যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবেলা করা যায়। বিবিসি বাংলা।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক