সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকায় ১১ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের পর সন্তান জন্ম নেওয়ার মামলায় আসামি মো. রাজু আহমেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে দণ্ডিতের ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
ধর্ষণে জন্ম নেওয়া সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দণ্ডিতই তার বাবা বলে প্রমাণিত হয়। তাই বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় ওই সন্তানকে ২১ বছর পর্যন্ত সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে লেখাপড়াসহ সমস্ত প্রকার খরচ রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। এর আগে চাইলে ভুক্তভোগীর পক্ষ বা বাবার পক্ষে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে সন্তানকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারবেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউর মাহমুদা আক্তার। ভুক্তভোগীর পক্ষে আইনি সহায়তা দেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট ফাহমিয়া আক্তার রিংকি।
রায় সম্পর্কে ফাহমিয়া আক্তার রিংকি বলেন, মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছিল। কিন্তু শিশু সন্তানটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। জন্ম নেওয়া শিশু সন্তানটি এখন সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে আছে। রায় অনুযায়ী ২১ বছর পর্যন্ত সরকারি খরচে সেখানে থাকবে। তার আগে পারিবারিক আদালতে আবেদনের মাধ্যমে কোনো পক্ষ নিতে চাইলে নিতে পারবে। এর মধ্যে না নিলে ২১ বছর পার হওয়ার পর কোনো পক্ষকে নিতে হবে।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত মো. রাজু আহমেদ (৩৫) ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডিত ঢাকার সবুজবাগ থানার ৭৫, ওহাব কলোনির এমএ কালামের ছেলে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঘটনার সময় ভুক্তভোগী বনশ্রীর ইস্টার্ন কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। তার মা একজন শিক্ষিকা। বাসায় মায়ের অনুপস্থিতিতে ২০১৭ সালের ১২ মে থেকে প্রায় সময় ধর্ষণ করত অভিযুক্ত। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মেয়ের শারীরিক গঠন দেখে সন্দেহ ভুক্তভোগীর মায়ের।
হাসপাতালে নেওয়ার পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চিকিৎসক বলেন, সেই কিশোরী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে মেয়েকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করিলে সে জানায়, উক্ত আসামি প্রায়ই বাসায় এসে ধর্ষণ করেছে। ওই ঘটনায় ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর মা মামলা করেন। মামলার পর ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ছেলে সন্তান প্রসব করে।
মামলাটি তদন্তের পর একই বছর ৭ মে আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারকালে ট্রাইব্যুনাল চার্জশিটের ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
সূত্র: আমাদের সময়