‘কিছু উপাচার্য সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষেপিয়ে তুলছে’

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা শিক্ষার্থীদের ‘সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছেন’ বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘কতিপয় ভিসি ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার মিশনে নেমেছে। এটা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় তিনি এই অভিযোগ করেন। ইনু বলেন, ‘কিছু সমস্যা যা কাঁটার মতো পায়ে বিঁধছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের কারও কারও কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা, আচার-আচরণ দুঃখজনক।’

জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, ‘মৌসুমে মৌসুমে জঙ্গি তাণ্ডব, জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে প্রমাণ হয় যে, হেফাজত-জামাত-জঙ্গি এরা বদলায়নি। এরা বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার্ড বেঈমান। পাকিস্তানপন্থার ধারক ও বাহক। এদের আত্মা পাকিস্তানি।’

এই সাম্প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের ধর্মরিপেক্ষতাকে হারাম বলে। আর ভারত, আমেরিকা, ইংল্যান্ডে গেলে তারা ধর্মনিরপেক্ষতাকে হালাল বলে। আরাম মনে করে। এই দ্বিমুখী চালবাজির রাজনীতি বন্ধ করা দরকার। এটা প্রমাণ হয় যে… জঙ্গিরা হচ্ছে মাঠের অ্যাক্টর। জামায়াত হচ্ছে ডিরেক্টর। বিএনপি হচ্ছে প্রডিউসার। সুতরাং এরা পাক রুহানি শক্তি দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত। জেনেটিক্যালি সম্পর্কযুক্ত। তিনপক্ষকেই দমন ও বিদায় জানানো উচিত।

১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য পাকিস্তদানের ক্ষমা চাওয়ার দাবি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাসদ সভাপতি।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথ চলার জন্য স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সংবিধান পর্যালোচনা করা দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সংবিধান পর্যালোচনা ও সংস্কার করা দরকার। সেজন্যই সংবিধান পর্যালোচনার জন্য সংসদের বিশেষ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করছি।’

ইনু বলেন, ‘সাম্প্রতিক ইউপি নির্বাচনে যে রক্তারক্তি-খুনোখুনি হয়েছে, তার দায় প্রশাসন এবং পুলিশ এড়াতে পারে না। তাদের এই দায় নেওয়া উচিত এবং সংশোধান হওয়া উচিত। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য ওঠানামা মূ্ল্যস্ফিতীর জন্য নয়, বাজার কারসাজির জন্য। এ ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন।

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার। টানা সাতদিন অনশনের পর বুধবার অনশন ভাঙেন আন্দোলকারীরা।

ওই আন্দোলন চলার মধ্যেই শাবি ভিসির বক্তব্যের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জাহাঙ্গীরনগরেও তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরে ওই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান অধ্যাপক ফরিদ।-সূত্র : আমাদের সময়