কাগজপত্রহীনদের ধরতে কর্মস্থলে হানা দেয়া যাবে না

ট্রাম্পের আরেকটি কঠোর বিধি রহিত করলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার বাইডেন প্রশাসনের এক ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, অভিবাসনের মর্যাদাহীনদের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অভিযান পরিচালনা করা যাবে না। এরফলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্বাচনী অঙ্গিকারের পরিপূরক আরেকটি সিদ্ধান্ত পেল আমেরিকানরা।

বাইডেনের আন্তরিক আগ্রহে ১১ মিলিয়ন কাগজপত্রহীন অভিবাসীকে নানা প্রক্রিয়ায় সিটিজেনশিপ প্রদানের বিল কংগ্রেসে উঠলেও তা এখনও পাশ হতে পারেনি রিপাবলিকানদের অসহযোগিতার কারণে। এ অবস্থায় সবসময় সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছিলেন কাগজপত্রহীনরা। এই ঘোষণায় তারা স্বস্তি পেলেন। গ্রেফতার অভিযান স্থগিত হবার অর্থ হচ্ছে তাদেরকে আপাতত: যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের ঝুঁকি একেবারেই কমলো বলে মনে করছেন মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তারা। অভিবাসন আইনের এক্সপার্টরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাইডেনের এ সিদ্ধান্তে।

উল্লেখ্য, ১১ মিলিয়ন কাগজপত্রহীনদের মধ্যে অন্তত: লক্ষাধিক বাংলাদেশিও রয়েছেন। বাইডেনের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কাগজপত্রহীনদের ন্যায্য পারিশ্রমিক নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছিল তাও দূর হয়ে যাবে। অর্থাৎ গ্রেফতার আর বহিষ্কারের হুমকি দিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিকের পক্ষেই কর্মচারিদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত রাখা যাবে না।

বাইডেনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী তথা অভিবাসন দফতরের মুখ্য কর্মকর্তা আলেজান্দ্রো এন মেয়রকাস এ প্রসঙ্গে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, কর্মস্থলে অভিযান পরিচালনা স্থগিতের সিদ্ধান্তে মূলত: কঠোর পরিশ্রমী শ্রমিক-কর্মচারিগণের কর্ম-পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত হবে এবং শ্রমিক তার ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে আর কখনোই বঞ্চিত হবেন না। এটি যুগান্তকারি একটি পদক্ষেপ মানবাধিকারের প্রশ্নে। আলেজান্দ্রো তার সকল অফিসকে নির্দেশ দিয়েছেন, ৬০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কর্মকৌশল অবলম্বনের জন্যে। যা কার্যকর হলে কাগজপত্রহীনরাও নিজ নিজ অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারবেন। কর্মস্থলে বৈষম্য থাকবে না। কাগজপত্রহীনরা বিরুপ আচরণের ভিকটিম হবেন না।

উল্লেখ্য, বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে এলো যখন শ্রম-সেক্টরে শ্রমিক সংকট চরমে উঠেছে। করোনার কারণে সৃষ্ট এই সংকট মোকাবেলায় এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রের মত কাজ করতে পারে বলেও অনেকে অভিমত পোষণ করেছেন। বাইডেনের এই ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করে ‘দ্য ন্যাশনাল পার্টনারশিপ ফর নিউ আমেরিকান্স’ নামক একটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নিকোল মিলাকো বলেন, ১১ মিলিয়ন কাগজপত্রহীন অভিবাসীর আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম করতে আরো অনেক কিছুই করতে হবে ডেমক্র্যাট প্রশাসনকে। আর কখনোই কাউকে অভিবাসনের মর্যাদার প্রশ্নে আতংকে দিন কাটাতে হবে না-এমন একটি পদক্ষেপ জরুরীভাবে নিতে হবে। অভিবাসনের ভঙ্গুর অবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে কঠোর পরিশ্রমী ও মেধাবি সকলকে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন-অভিযাত্রায় কাজের সুযোগ অবারিত করতে হবে।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন