কলেজে ভর্তি হবার টাকা না পেয়ে অভিমানে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

দুর্গাপুর প্রতিনিধিঃ

এসএসসি পাশ করে সহপাঠিদের সঙ্গে কলেজে ভর্তি হবে নিজের মধ্যে এমন স্বপ্ন এঁকে ছিলেন দিনমজুরের মেয়ে কূলসুম খাতুন (১৭)। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেও কলেজে ভর্তি হওয়ার সেই স্বপ্ন পূরুণ হলো না তাঁর। কলেজে ভর্তি হবার টাকা না পেয়ে বাবা মা’র ওপর প্রচন্ড অভিমান করে জীবনটাই দিয়ে দিল। গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিজ ঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করে সে। মেধাবী কূলসুম দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর খুলুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর রোহাব মন্ডলের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, কূলসুমের পরিবারে নিজের মা ছাড়াও সৎ মা আছে। সে পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী ছিল। তবে সুযোগ সুবিধা তেমন পেত না, তাঁর বাবা একজন দিনমজুর। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে ৪.৮৩ পয়েন্ট পেয়েছে। পাশ করার পর কূলসুমের জেদধরে তাঁর সহপাঠিদের সঙ্গে কলেজে ভর্তি হবেন।

গতকাল রোববার সহপাঠিদের সঙ্গে কলেজ ভর্তি হবার কথা ছিল। এজন্য গত শনিবার বিকেলে কূলসুম তার বাবা মা’র কাছে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য টাকা চায়। কিন্তু অভাবের সংসারে কূলসুমের কলেজে ভর্তি হবার মত টাকা ছিল না পরিবারের কাছে। তাই টাকা দিতে পারবে না বলে জানায় কূলসুমের বাবা মা। তাদের এমন সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারছিল না কূলসুম। অভিমান নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে অভিমান নিয়ে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আন্তহত্যা করে সে।

তাঁর শিক্ষক দেবীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধানশিক্ষক নূরুল হুদা রনি বলেন, কূলসুম পড়ালেখায় ভাল ছিলো। তাঁর বাবা খুবই দরিদ্র। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.৮৩ পয়েন্ট নিয়ে পাশ করে। অভিমান নিয়ে তাঁর এভাবে চলে যাওয়া মানতে পারছেন শিক্ষক-সহপাঠিরাও।

দুর্গাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী বলেন, মেয়েটার কলেজে ভর্তি হবার টাকা ও বই কিনে দিতে চায়নি বাবা মা। এতে অভিমান নিয়ে সে আত্নহত্যা করে। ওই মেয়েটার পরিবার খুব দরিদ্র। পরিবার ও এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।