কর্মস্থলে যৌন হয়রানি রোধে সামাজিক আন্দোলনে গুরুত্বারোপ

কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশে অনেক আইন আছে কিন্তু অনেক আইন সম্পর্কে আমরা জানি না। শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না সেটা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ও দি ডেইলি স্টার এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি ও সহিংসতা: প্রতিরোধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ আহ্বান জানান। বিলস্ ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হলে আগে আমাদের সুনাগরিক হতে হবে। সুনাগরিক না তৈরি করতে পারলে সমাজের বৈষম্য যেমন দূর করা যাবেনা তেমনি নারীর প্রতি হয়রানি ও সহিংসতাও বন্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, পারিবারিক সহিংসতা আইন একটি অত্যন্ত যুগোপযোগী আইন কিন্তু সেটা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

শিরীন আখতার বলেন, নির্যাতন ও হয়রানি শুধু নারীর ক্ষেত্রেই হয় তা না। এটা পুরুষের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়রানি প্রতিরোধ খসড়া আইনটি কিভাবে সরকারের মন্ত্রীসভা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। কমলা রঙ্গের একটি বিশ্ব গড়তে হলে সমাজের কোথায় কোথায় পরিবর্তন করতে হবে সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভুঁইয়া বলেন, আমাদের সন্তানদের শুধু লেখাপড়া করালেই হবে না তারা যেন নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি কর্মস্থল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠনে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিলস্ মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা শিল্প কারখানা বা এর বাহিরে যেসব নারী শ্রমিক কাজ করেন তাদের হয়রানি বন্ধে কাজ করছি। ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। একটি খসড়া আইন আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দেওয়া হয়েছে। আইন হলেই নারীর প্রতি সহিংসতা অনেকটা কমে আসবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, কর্মজীবী নারীর কর্মসূচী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, বিলস্ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ