সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ
ইউক্রেনে সন্তান জন্ম দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর করোনাভাইরাসে এক মায়ের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ইভানকো-ফ্রাংকিভিসক শহরে একটি পেরিনেইটাল কেন্দ্রে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন ৩৬ বছর বয়সী গ্যালিনা।-খবর মেইল অনলাইনের
গত ১০ মার্চ তিনি সেখানে ভর্তি হন, তখন তার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। কিন্তু কেন্দ্রটিতে ১৯ দিন অবস্থানকালে তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ভ্লোদিমির চেমনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২৯ মার্চ ওই নারীর অবস্থা হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যায়। তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে যায়। আর শরীরের তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়।
‘তার শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হতে শুরু করে। দ্রুতই তার নিউমোনিয়া হয়ে যায়। তার শরীরে করোনাভাইরাস পজেটিভ দেখা দেয়।’
একইদিন সন্ধ্যায় গ্যালিনা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এরপর তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওকসানা স্ট্যাশভিচ নামের তার এক আত্মীয় বলেন, তিনি মারা যাচ্ছেন বলে আমাদের জানানো হয়েছে। ওয়ার্ডে ঢুকে তাকে বিদায় জানাতে বলা হয়েছে আমাদের। সন্তান জন্মদানের কয়েক ঘণ্টা পরেই তার মৃত্যু হয়েছে।
তার আত্মীয়-স্বজন বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গ্যালিনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মৃত্যুর জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরাই দায়ী করবো। তাকে এমন একটি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল, যেখানে জ্বর নিয়ে আরও দুই নারী ভর্তি ছিলেন। কয়েকদিন একই কক্ষে রাখার পরে তাদের আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরইমধ্যে জানা গেছে, করোনার ভয়ে আগে থেকেই গণকবর খোঁড়া শুরু করেছে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ডিনিপ্রো শহর। ইউক্রেনের সংবাদ মাধ্যম কিয়েভ পোস্ট জানিয়েছে, সরকারের সহায়তায় খোঁড়া হয়েছে এসব গণকবর।
কিয়েভ পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৩ এপ্রিল ৬০০টির মত গণকবর খোঁড়া হয়েছে ইউক্রেনের ডিনিপ্রো শহরে। এছাড়া মরদেহের জন্য কয়েক হাজার ব্যাগও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শহরটির কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনায় মৃতদের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তারা। এছাড়া এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা মানুষকে কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে সচেতন করতে চান।
ইউক্রেনে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২শ ৫১ জন। মারা গেছেন ৩২ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১২ লাখ ১ হাজার ৯৩৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪ হাজার ৭২০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩৪ জন।