করোনা কালে বাগাতিপাড়ার শিক্ষার্থীদের পাশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী


বাগাতিপাড়া  প্রতিনিধি:
সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে পড়েছে কোভিড-১৯ এর প্রভাব । থমকে গেছে স্বাভাবিক পাঠদান, বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘনবসতিপূর্ণ গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে  পড়েছেন চিন্তিত।

এসব ভাবনা থেকেই নাটোরের বাগাতিপাড়ায় করোনা কালে ছুটিতে বাড়িতে আসা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ঝাঁক তরুণ তরুণী গ্রামের অবহেলিত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখাতে কাজ করে চলেছেন অবিরাম। তরুন-তরুণীরা গড়ে তুলেছেন ‘ড্রীম টু ড্রীম’ নামের একটি সংগঠণ।

সংগঠনটির একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ স্কুল কলেজের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নই দেখেনা । তাই এসব অবহেলিত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধ বিচরনের জন্য স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এসব তরুন-তরুণীরা। করোনা কালে ছুটিতে বাড়িতে এসে নিজেরাও বসে রয়েছেন।

এই ফাঁকে এসব বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন বুনে দিচ্ছেন। সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীদের নিয়ে “ড্রীম টু ড্রীম” স্বপ্ন ছোঁয়ার দিশারি নামক একটি সংগঠন তৈরি করেছেন।

যার সভাপতি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এবং ব্যাংক কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন শান্ত, সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান ইমু (রাবি), সদস্য- আবুল বাসার (নোবিপ্রবি), শিমুল আলী (জাবি), তানভির রহমান (খুয়েট), জয়া সরকার (জবি) সহ মোট ৩৪ জন। যারা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও দলগত ভাবে অনলাইন ও সেমিনারের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা উপদেশ ও ভর্তিপরীক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য মূলক পরামর্শ প্রদান করবেন।

এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করবেন বলে তারা জানান। আর তারই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে রোববার সকালে আলোক বর্তিকা নামের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য এক সেমিনারের আয়োজন করা হয় উপজেলার জিগরী উচ্চবিদ্যালয়ে। যেখানে এলাকার ৩৩ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।

সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন শান্ত বলেন, একটি সংগঠন করার দীর্ঘদিন থেকে ইচ্ছা ছিলো যেটা পিছিয়ে পড়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের গ্লুমিং করে এবং ভালো কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ করে দেয়।

সেই থেকেই আমাদের এই উদ্যেগ, সদস্যরা অনেক পরিশ্রম করছেন যেনো বাগাতিপাড়ার শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি আমরা এই সংগঠন টাকে অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। পিছিয়ে পড়া অবহেলিত গ্রামীণ শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই এই মহান উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

ফাগুয়াড় দিয়াড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আজাহার আলী বলেন, কোভিড-১৯ পুরো বিশ্বকে ধাবিত করছে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে। প্রাণহীন নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে মাঠে-ঘাটে, পথে-প্রান্তরে। এ যেন সৌরজগতের এক নতুন পৃথিবী। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা উপজেলার শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে নিতে যে কাজ করছে যা প্রশংসার দাবিদার।

স/আ.মি