করোনায় মৃত মুক্তিযোদ্ধার মুখাগ্নি করলেন পুলিশ সুপার রাশেদুল

ফরিদপুরে রোববার সকালে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কমলেশ চক্রবর্তী ভানু।

সাদালাপী ও বন্ধুবৎসল এই মুক্তিযোদ্ধা নেতা একই সঙ্গে ফরিদপুরের সদর উপজেলার পূজা উদযাপন কমিটিরও সভাপতি। তিনি শহরের অন্যতম নিলটুলী কালিমন্দিরের পুরোহিত।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মাহফুজুর রহমান বুলু জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফমেক হাসপাতালে মারা যান কমলেশ চক্রবর্তী। এরপর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হাসপাতাল থেকে লাশ নেয়া হয় অম্বিকাপুর মহাশ্মশানে। সেখানে স্থানীয়রা তার লাশ নামাতে বাধা দেন।

এ অবস্থায় বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এইচএম ফোয়াদ, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরকত ইবনে সালাম ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোজাম্মেল হোসেন মোজাকে বিষয়টি দেখতে বলেন।

ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এইচএম ফোয়াদ জানান, এমপি মহোদয়ের নির্দেশে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি স্থানীয়রা লাশ নামাতে বাধা দিচ্ছে। তখন শ্মশান কমিটি, পূজা উদযাপন কমিটিসহ স্থানীয় হিন্দু নেতৃবৃন্দকে ফোন করেও তাদের আনতে পারিনি। পৌর মেয়রকেও পাওয়া যায়নি ফোনে। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে লাশ নামানোর ব্যবস্থা করি।

শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি বরকত ইবনে সালাম জানান, সেখানে শ্মশানের লাশ দাহ করার কাজে নিয়োজিত কেউ ছিলো না। ফলে লাশে জ্বালানী খড়ি সাজানোরও কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম নিজেই তার লাশের উপর জ্বালানী খড়ি সাজিয়ে দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম বলেন, মৃতদেহের ওপর জ্বালানী খড়ি দেওয়ার পর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজার নেতৃত্বে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর তার জ্যেষ্ঠ সন্তান দীপ চক্রবর্তী মুখাগ্নি করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুলিশ ও প্রশাসনের মাধ্যমে এই মুক্তিযোদ্ধার সৎকার সম্পন্ন হয়। সূত্র: দেশ রুপান্তর