করোনায় মৃত্যুহীন ভুটানে শুরু লকডাউন, বেলা গড়াতেই নিঝুম দেশ

টানা তিন মাসের বেশি সময় ধরে করোনা প্রতিরোধ লড়াইতে চমক দিয়েছে ভুটান। এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর পরিসংখ্যান আসেনি। এমনই করোনায় মৃত্যুহীন দেশে মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো দেশজোড়া লকডাউন।

আচমকা লকডাউন ঘোষণাঘোষণা পরেই রাজধানী থিম্পুর জনজীবন স্তব্ধ হতে চলেছে। জাতীয় সংবাদ সংস্থা বিসিএস জানাচ্ছে, এই লকডাউন চলবে টানা ৫ দিন। ভারতে করোনার বিরাট সংক্রমণ ও মৃত্যুর বিষয়ে ভুটান সরকার উদ্বিগ্ন।

দৈনন্দিন জীবনযাত্রার বেশিরভাগ উপকরণের জন্য ভারতের উপরেই নির্ভর করে ভুটান। অপর প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই নেই ড্রাগনভূমির।

ভুটানে লকডাউনের সংবাদে সীমান্তের ওপারে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জয়গাঁ জুড়ে চাপা আলোচনা। জয়গাঁবাসীর বাড়িগুলির একদম গা ঘেঁষে থাকা ভুটানের চু়খা জেলার ফুন্টশোলিং বাণিজ্য শহর। সেখানকার জনজীবন স্তব্ধ হতে শুরু করেছে। আর অসমের লাগোয়া জেলেফুতেও একই ছবি।

কড়া নিয়মের দেশ ভুটান করোনা প্রতিরোধ লড়াইতে বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য ফেলেছে আগেই। ওয়ার্ল্ডোমিটার এবং রয়্যাল ভুটান স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব, সর্বশেষ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯৭ জন। সুস্থতা ৯০ শতাংশ। এমনই বিরাট সফলতার পরেও লকডাউন কেন উঠছে প্রশ্ন। দক্ষিণ এশিয়ার এই একটি দেশেই এতদিন লকডাউন করা হয়নি।

বিবিএস এবং থিম্পুর সংবাদ মাধ্যমের খবর, সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ পারো শহরে করোনায় আক্রান্ত হন এক বৃদ্ধা। তিনি থিম্পু এবং জেলেফু শহরের বেশ কয়েকজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এই সংবাদ আসতেই সম্পূর্ণ লকডাউন শুরু করল ভুটান সরকার।

তবে গত সপ্তাহে দেশের সর্বত্র করোনা মোকাবিলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রাজধানী থিম্পু ফিরেছেন রাজা জিগমে খেসর নামগিয়াল ওয়াংচুক। সফরে তিনি জোর দেন ভারত লাগোয়া সীমান্ত জেলাগুলি পরিদর্শনে। ভারত সীমান্তের শূন্য রেখার গা ঘেঁষে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলি দেখেন তিনি। তাঁর এই অভিনব পরিদর্শনের পর লকডাউনের পথ নিল ভুটান সরকার।

প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং লকডাউনের নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সোশ্যাল সাইটে সেই বার্তা ছড়িয়েছে বজ্র ড্রাগনের দেশে। সূত্র: কলকাতা ২৪