করোনায় বিপাকে রাজশাহীর শ্রমজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:


করোনায় বিপাকে রাজশাহীর শ্রমজীবীরা। এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনা নামক ভাইরাস রয়েছে। সেটি অর্থনীতি থেকে শুরু করে জীবন ব্যবস্থা সবই আজ ধ্বংসের পথে। চারদিকে মৃত্যুর মিছিল, মানুষের আর্তনাদ-হাহাকার। দিন যতোই বাড়ছে ততোই এ ভাইরাসে সংক্রমণের হার বাড়ছে।



বিশ্বের অন্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারও মানুষকে সুরক্ষা দিতে কয়েক দফা লকডাউন দিয়েছে। লকডাউনের উদ্দেশ্যে মানুষের গণজমায়েত বন্ধ করা এবং ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষা করা। কিন্তু লকডাউন ভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচালেও বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা।

এসব মানুষেরা প্রতিদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শ্রম বিক্রি করে সংসারের চাকা ঘোরায়। প্রতিদিন সকাল হলে তাদের মাথায় চিন্তার ভাজ পড়ে পরিবারের সদস্যদের পাতে ভাত দিতে হবে। এ চিন্তা মাথায় নিয়ে প্রতিদিন শ্রম বিক্রি করে যান তারা। কোনো একদিন শ্রম বিক্রি করতে না পারলে তাদের চুলায় আগুন জ্বলে না। পরিবারের সদস্যদের পাতেও জোটে না ভাত। কেউ দয়া করে তাদের পাতে একবেলা ভাতের ব্যবস্থা করে দেয় না। এসব মানুষের পেটের দায়ের কাছে মৃত্যুকুপের নেই কোনো ভয়। তাদের কাছে ভাইরাসের নেই ভয়। তাদের একটাই ভয়; পরিবারের সদস্যদের মুখে আহারের ব্যবস্থা করে দিতে না পারা। তাই তারা ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শ্রম বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়েন।



এসব শ্রমজীবী মানুষের এখন গলার কাঁটা লকডাউন। সরকার যখন মানুষকে বাঁচাতে লকডাউন দিয়ে রেখেছে তখনই এসব শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কারণ লকডাউন তাদের পেটের ভার বহন করবে না। ঘর থেকে বের না হয়ে শ্রম বিক্রি না করলে তারা খাবে কি। তাই এ লকডাউন তাদের কাছে আর্শিবাদ নয়; অভিশাপ হিসেবে নেমে এসেছে।

রাজশাহী নগরী ও আশে-পাশের এলাকায় অনেকটাই চুরি করে অটো, অটোরিক্সা চালাচ্ছেন অনেকেই। তবে কেউ মহাসড়কে আসলে তাকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কোন কোন সময় চাকার বাতাস ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় একদিকে করোনা অন্যদিকে জীবিকা নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন নিম্ন আয়ের এই মানুষগুলো।

নগরের ছোটন ইসলাম। তিনি রিক্সা চালায়। রিক্সাটা কিনেছেন ঋণ করে। ঋণ পরিশোধ,আর নিজের সংসার। দুই চালান তিনি। তিনি বলেন- সড়কে মানুষ নেই বললেই চলে। অটোরিক্সা তবুও বের করছি। যা উপার্যন হয়।

সেলিম নামের অপর রিক্সা চালক জানান- কাজের অবস্থা ভালো না। কোন রকম করে চলছি। এবার কেউ ত্রাণও দেয়নি। যে পরিবার নিয়ে খাব। কখনও আমি রিক্সা চালায়। আবার ১০ বছরের ছোট ছেলে তামিম রিক্সা চালায়। এই ভাবেই চলছি আমরা।

স/আ