করোনার মধ্যেও আড়ানী পৌরসভায় টোল আদায়ের নামে চলছে চাঁদাবাজি

বাঘা প্রতিনিধি
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশজুড়ে চলছে ঘোষিত লকডাউন। এরমধ্যে খাবারসহ জরুরী প্রয়োজনীয় যানবাহনগুলো চলাচল করছে। সবকিছু বন্ধ রাখা হলেও সরকারী সিদ্ধান্ত অমান্য করে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় চলছে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাজশাহী সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন। কিন্তু প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছেন। এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা হতাশার মধ্যে পড়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ হেডকোয়াটার্স কর্তৃক জারীকৃত সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সারাদেসে সুষ্ঠপণ্য পরিবহন নিশ্চিতকরনের লক্ষে সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা কর্তৃক মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন হতে কোন ধরনের টোল না আদায় করার স্বীদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু আড়ানীতে এই সীদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বিচারে টোল আদায় করে যাচ্ছে। যা সরকারী সীদ্ধান্ত এবং সারাদেশে সুষ্ঠ পরিবহন নিশ্চিতকরনের পরিপন্থী। এই টোল আদায় করছে আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া গ্রামে তৈয়বুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন ও মাষ্টারপাড়া গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে লেলিন হোসেন। এই দুইজন মেয়রের নাম ভাঙ্গিয়ে কাউকে কোন তোয়াক্কা না করে টোল আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহনের আড়ানী শাখার সভাপতি রায়হান কবীর বলেন, আমার কাছে টোল আদায়ের অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে শ্রমিকরা অভিযোগ করলে আমি বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছি। তবে সাময়িকের জন্য বাঘা থানার পুলিশ এসে বন্ধ করলেও বর্তমানে টোল আদায় অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ পত্রের স্বাক্ষরকৃত ব্যক্তিদের টোল আদায়কারীরা নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন।

এদিকে স্থানীয় এক সাংবাদিক শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার পথে জোর পূর্বক পথরোধ করে  ফারুক হোসেন ও লেলিন হোসেন। এ সময় মেয়রের সাথে দেখা করানোর জন্য জোর করেন। পরে দেখা করবে বলে জানালেও তারা সাংবাদিকের কথা না শুনে মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয় এবং তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ওই সাংবাদিককে বলে দিতে বলেন যে, এখানে কোন চাঁদাবাজি হচ্ছে না।

বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রীর রাজনৈতিক এপিএস এবং আ.লীগের রাজনৈতিক নেতাদের অবগত করা হয়েছে। কিন্তু ওই চাঁদাবাজদের ব্যাপারে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এদিকে প্রেস ক্লাবের সকল সাংবাদিক ওই টোল আদায়কারী লেলিন ও ফারুকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ট্রাক চালক রনি আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করায় আমাকে টোল আদায় কাবী ফারুক হোসেন, লেলিন হোসেনসহ কয়েকজন গালিগালাজ করে ও মারপিটের হুমকি দেন।

আড়ানী শাখার সড়ক পরিবহনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আমি বর্তমান দেশের ভয়াবহ অবস্থার কথা চিন্তা করে এবং সরকারের আদেশ বাস্তবায়নের জন্যে এই চাঁদাবাজি বন্ধের সাথে একমত পোষন করি। তাই টোল আদায়কারী আমাকে মারধোরের হুমকি দেয়। আমাকে তারা বলে মেয়র মুক্তার অনুমতি দিলে তোর হাত পা ভেঙ্গে দিব। আর আমার আড়ানী বাজারের সবজির দোকান ভেঙ্গে ফেলতেও চেয়েছে তারা।

বাঘা উপজেরা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কেন টোল আদায় হচ্ছে, তা মেয়র মুক্তার সঠিক বলতে পারবেন। আমি ইউনিয়নগুলো দেখভাল করি। পৌরসভা স্থানীয় সরকার দেখভাল করেন।

আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী বলেন, অভিযোগের পর টোল আদায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে আমার অজান্তে কেউ দোল আদায় করলে অবশ্যই পৌরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিব।

স/অ

রাজশাহীতে ট্রাকের চাঁদার হিসেব চাওয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে সভাপতি গ্রুপের হাতাহাতি