করোনার বুস্টার ডোজ রোববার শুরু

করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম আগামী রোববার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

আজ শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের পর বুস্টার ডোজ নিতে হয়।কারণ নতুন গবেষণা বলছে, আমাদের শরীর যাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয়, অ্যান্টিবডির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করে টিকা। তবে টিকা নিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা কমতে থাকে।

প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন মাস পর করোনার বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। আর দ্বিতীয় ডোজের ছয় মাস পর তা অনেকটাই কমে যায়। কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে ছয় মাস পর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় আগের চেয়ে ১৫ গুণ। ফলে এক বা দুই ডোজ টিকা অধিকাংশ ব্যক্তিকে গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দিলেও সংক্রমণ ঝুঁকি থাকে। তাই বুস্টার ডোজ নিতে হবে। তাছাড়া নতুন ধরন অমিক্রনের কারণে বুস্টার ডোজ জরুরি হয়ে পড়েছে।

বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘প্রথমে সম্মুখসারির চিকিৎসক, নার্স, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী এবং বয়স্কদের এই বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে।’

জাহিদ মালেক আরও জানান, দেশের প্রায় ৭ কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় চলতি বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

চলতি বছরের গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে।

২০২০ সালের এপ্রিলের পর চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুহীন দিন পার করে বাংলাদেশ।সর্বশেষ দ্বিতীয়বারের মতো গেল বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) মৃত্যুশূন্য দিন পার করেছে দেশ।

এবার ভাইরাসটির আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ সংক্রমণ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই দুইজন শনাক্ত হয়েছেন।  তারা দুজনই জিম্বাবুয়েফেরত জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সদস্য। আক্রান্ত দুই নারী ক্রিকেটার সুস্থ আছেন।

 

সূত্রঃ যুগান্তর