করোনার টিকার সফলতা নিয়ে ৯৯ ভাগ নিশ্চিত চীনা কোম্পানি

কোভিড-১৯ রোগের প্রতিষেধক বের করতে ব্যস্ত চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাদের টিকা ৯৯ ভাগ কর্যকর হবে বলে তারা নিশ্চিত।

বেইজিংভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি সিনোভ্যাক বলছে, বর্তমানে তাদের টিকা পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে। এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী এতে অংশ নিয়েছেন।

ব্রিটেনের প্রথম সম্প্রচার মাধ্যম হিসেবে স্কাই নিউজ ওই পরীক্ষাগারে পরিদর্শনে গিয়েছিল।

কোম্পানিটি বলছে, ব্রিটেনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায় অর্থাৎ তৃতীয় স্তর চালানো নিয়ে প্রাথমিক আলাপ চলছে।

সিনোভ্যাকের লিও বিশান নামের এক গবেষককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই টিকার সফলতা নিয়ে তিনি আশাবাদী কিনা। জবাবে বললেন, হ্যাঁ, এটি অবশ্যই সফল হবে…৯৯ ভাগ নিশ্চিত।
বায়োটেক সংস্থাটি ১০ কোটি টিকার ডোজ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে একটি বাণিজ্যিক প্ল্যান্ট তৈরি করছে।

গত মাসে অ্যাকাডেমিক জার্নাল সায়েন্সে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে সিনোভ্যাক। তাদের টিকার নাম দেয়া হয়েছে করোনাভ্যাক।

ইতিমধ্যে এই টিকা বানরকে করোনা থেকে থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। এখন কোম্পানিটির জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, চীনে করোনা রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। এতে মহামারীর পরিস্থিতির ভেতরে টিকার পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

কাজেই তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য নতুন ক্ষেত্র খুঁজছে সিনোভ্যাক।

কোম্পানির বিনিয়োগসম্পর্কিত জ্যেষ্ঠ পরিচালক হেলেন ইয়াং বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে কথা বলছি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। বর্তমানে এটি আলোচনার খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ।

গবেষণা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কোম্পানিটি উৎপাদনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পরীক্ষা সফল হলে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলে তারা সরাসরি উৎপাদনে যাবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

প্রতিষ্ঠানটি বেইজিংয়ের অন্য আরেকটি অঞ্চলে টিকা উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক প্ল্যান্ট তৈরি করছে।

ইয়াং বলেন, আমাদের পরামর্শ হবে, সবাইকে টিকা দেয়ার দরকার নেই। আমরা এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি ও পরামর্শ দিচ্ছি।

‘প্রথমে আমরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করব, যাদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রয়েছেন। করোনায় তাদের মৃত্যুহার বেশি। সত্যি কথা বলতে গেলে, টিকার লট হিসেবে ধাপে ধাপে তৈরি করতে হবে।’

অবশ্য এখনই খুব দ্রুত ভ্যাকসিন আশা করা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় ধাপ শেষ হওয়ার পর তৃতীয় ধাপে বেশ কয়েক মাস লাগবে। টিকার কার্যকারিতা জানার পরে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

সাফল্যের বিষয়ে নিশ্চিত কি না, জানতে চাইলে ইয়াং বলেন, এই মুহূর্তে বলা খুব কঠিন। অনিশ্চয়তা রয়েছে, তবে তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ঠিকভাবেই সবকিছু এগোচ্ছে।